সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৪১ অপরাহ্ন

গল্প:- মায়ের মৃত্যুতে খোকার বাড়ি যাওয়া

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩১ Time View

কলমে:- এম.কে.জাকির হোসাইন বিপ্লবী

বহুদিন পরে বাড়িতে যাচ্ছে খোকা। কিন্তু খোকা নিজেও জানতো না, তার জীবনের আপন মানুষটি বেঁচে নেই। চরপাড়া গ্রামের মানুষের ভালোবাসার মানুষ খোকা। খোকা শহরে থাকে, বিশ্ব-বিদ্যালয়ে অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র খোকা। চারিত্রিক মাধুর্যতা ভালো এবং মেধাবী ছাত্র খোকা। তাই গ্রামের মানুষ তাকে খুব ভালোবাসে। খোকাকে নিয়ে গ্রামের মানুষের অনেক স্বপ্ন। তাই খোকাকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখার জন্য, খোকার পরিবারের যেকোনো বিপদে গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসে। হঠাৎ খোকার মা খুব অসুস্থ, গ্রামবাসীরা চিন্তায় পরে গেলো। অপেক্ষিত মৃত্যু, খোকা তার মায়ের একমাত্র ছেলে। গ্রামবাসীরা মায়ের অসুস্থতা কথা গোপন রেখে খোকা-কে চিঠি পাঠালো।বহুদিন পর গ্রামের চিঠি পেয়ে খোকা অনেকটাই আনন্দিত। চিঠিতে লেখা চিলো, খোকা যেনো বাড়িতে গিয়ে ঘোরে আসে,খোকার মা খোকাকে দেখতে চায়। মায়ের কথা শুনে খোকা বাড়িতে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিলো।

পরের দিন খোকা অনেক আনন্দিত হৃদয় নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটছে। কিছুক্ষণ পরেই খোকা তার প্রিয় মানুষদের সাথে দেখা করবে। খানিকটা সামনের দিকে যেতে না যেতেই,খোকার মনটা খারাপ হয়ে গেলো। মূহূর্তের মধ্যে খোকার আনন্দিত হৃদটাতে এক কঠিন ব্যাথার জোয়ার এসে তাড়া করলো। অমানিশার কলো ছায়ায় ঢেকে গেছে চারিদিক। বাতাসে-বাতাসে ভেসে আসছে গ্রামের মানুষের কান্নার ধ্বনি। খোকা ভাবতে লাগলো,কি হলো হঠাৎ? আমি গ্রামে আসলে গ্রামের সবাই আমাকে আনন্দের সাথে স্বাগতম জানায়,আজ সবাই কোথায় গেলো? এরকম হাজারো প্রশ্ন খোকার মনে!

ভাবতে-ভাবতে খোকা নিজের বাড়ির সামনের রাস্তায় পা রাখলো। চলতি পথে খোকা বাড়ির দিকে চেয়ে দেখে তার বাড়িতে হাজারো মানুষের ভিড়। কান্নায় ভেঙ্গে পরেছে সবাই।খোকার আজ বোঝতে বাকি রইলো না,যে তার বাড়িতে কিছু একটা হয়েছে। কিন্তু তখনও খোকা বোঝতে পারেনি, এই পৃথিবীতে তার সবচেয়ে বড় আপনজন দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে গিয়েছে।খোকা বাড়ির উঠুনে গিয়ে দাঁড়াতেই গ্রামবাসীরা খোকাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। খোকা চেয়ে দেখলো বাড়ির উঠুনে সাদা কাপড়ে কে যেনো ঘুমিয়ে আছে! মসজিদের পালকিতে লাশ দেখে খোকা জিজ্ঞাস করলো তোমরা কাঁদছো কেনো?মা কোথায়?এই লাশ কার?
গ্রাম বাসীদের জবাবে মায়ের মৃত্যুর কথা শুনে খোকা অজ্ঞান হয়ে পরলো। মায়ের লাশ দাফন করা হলো। খোকা হাসপাতালে প্রায় উম্মাদ অবস্থায় চিকিৎসাধীন। কিছুদিন পরে খোকা কিছুটা সুস্থ হলো,এবং বাড়িতে ফিরে আসলো। পরবর্তীতে খোকা কিছুদিন বাড়িতে থাকার পরে আবারও বুক ভরা কষ্ট নিয়ে অচেনা মানুষের ভিড়ে, চেনা শহরে চলে আসলো। এখন আর কেও খোকাকে বাড়িতে যাওয়ার কথাও বলে না,খোকার জন্য কেও অপেক্ষাও করে না। সবশেষে পৃথিবীতে সবচেয়ে আপনজন মা,মা ছাড়া পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পরে। মা থাকলে সবাই ভালোবাসে,মা চলে গেলে বাবা নামক শব্দটিও পর হয়ে যায়।
———————————
এম.কে.জাকির হোসাইন বিপ্লবী।
কবি সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। ঢাকা বাংলাদেশ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102