প্রকৃতির কী নিদারুণ খেলা, তাই না চাইতেও মেনে নিতে হয় বিবেকের দংশনে। কালো কুৎসিত চেহারা তারপর আবার কিছু সমস্যা, যা একান্তই বেদনার।
বয়স টা বাড়ছে, সময় ঠিকই তার নিয়মে চলে যায়, চোখের নীচে কালি, আর কপালে চিন্তার ভাঁজ বলে ওঠে অর্ধ বুড়ি। আয়না টাও এখন হেসে ওঠে এখনি হাঁপিয়ে গেলি? এখনো অনেক পথ বাকি।
তারপর হঠাৎ করে বরের দ্বিতীয় পক্ষ হলাম। বাড়িতে পা রাখলাম সৎ মা হিসেবে। এবার শুরু হল অগ্নি পরীক্ষা। হেরে যাব কী তবে জীবনের কাছে? যোগ্য মা হয়ে ওঠা কি আর হবে? না কী সমাজের যাঁতাকলে ডাকটা রয়ে যাবে সৎ মা! সেখানে কী শাসন চলবে? লোকে বলবে সৎ মা। একদিন ওই সন্তান ও হয়তো ডাকবে সৎ বলে।
মা বলে হয়তো স্বীকার করবে না। স্নেহ দিলে হয়তো বা বলবে আদিখ্যেতা, সন্তান ও হয়তো বলবে রাখো তো, এসব ঢং আর ভালো লাগে না। তখন হয়তো আমি নিরাশ হব, লোকের কানাঘুষা ও আসবে।
তখন দম বন্ধ হয়ে আসবে, কিন্তু মরব না। হয়তো নিয়তি মরণ লিখেনি, তাই চলবে আমার উপর এক মানসিক অত্যাচার। হয়তো রক্ত ঝরবে না, পরিবারের কেউ কৌতুক ও করবে না, তবে কথায় আছে না, অভাগী। তারপর ধীরে ধীরে কেটে যাবে অনেক টা সময়, যৌবন পেরিয়ে যাবে, সাংসারিক চিন্তায় ডুবে যাব, যদিও তা আমার নয়। না স্বামী, না সন্তান, সবই তার থাকবে।
আমি শুধু মাত্র রাখালের মতো গো পালনে ব্যস্ত থাকব। অথবা বাড়ির পাহারা দারের মতো। সম্পর্ক শুধু মাত্র সমাজ অথবা কর্তব্যে বাঁধা থাকবে।
কখনো সন্তানের উপর জোর চলবে না।ভয় থাকবে, তার পছন্দের দাম দিলে যদি ভুল হয় তাহলে বলবে সৎ, তাই ক্ষতি চাওয়া অসম্ভবের কিছু না।
আর যদি ইচ্ছের দাম না দিয় তাহলে বলবে নিজের হলে সন্তানের বেদনা বুঝত না? আসলে সৎ মা চাইলেও পারে না। সমাজ ভীষণ কঠিন, সৎ মা সমাজের কঠিন ব্যাধি। মৃত্যুর পর যার সমাপ্তি। প্রিয়তম অথবা সন্তান তখন ভুলে যাবে দ্বিতীয় বলে। আসলেই দ্বিতীয় শুধু মাত্র একটা অবলম্বন, প্রয়োজন শেষে ডাস্টবিনে।
———————————–
আগয়া, আকছড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ ,ভারতবর্ষ।