রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার আখ চাষে সফল সিংড়ার সাগর

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩৬ Time View

মোঃ এমরান আলী রানা, নাটোর প্রতিনিধিঃ

পরের জমি লিজ নিয়ে কখনো ধান, কখনো গম, ভুট্রা আবার কখনো সবজি চাষ করে তেমন লাভের মুখ দেখতে না পারলেও এবার এলাকায় প্রথমবারের মত ফিলিপাইনের ব্লাক সুগার কেইন জাতের আখ চাষ করে সফল হয়েছেন সাগর নামের এক তরুন কৃষি উদ্যোক্তা। ১ বিঘা জমি থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার আখ বিক্রয় করেছেন তিনি। এতে খরচ বাদে তার লাভ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। তাঁর এমন সফলতা দেখে আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের। আটাশ বছর বয়সী ওই তরুন কৃষি উদ্যোক্তার বাড়ি নাটোরের সিংড়া পৌরসভার দক্ষিন দমদমা এলাকায়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইনের রঙ কিছুটা কালো খয়েরি। দেশীয় আখের মতো হলেও রয়েছে বেশকিছু ভিন্নতা। এ আখের কান্ড নরম, রসের পরিমান বেশি, মিষ্টিও বেশি। লম্বায় সাধারণত ১২ থেকে ১৬ ফুট হয়ে থাকে। জৈব সার আর গোড়ায় পানি রাখলেই দ্রুত বেড়ে ওঠে। কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না। তুলনামুলক কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন এ জাতের আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
সরেজমিনে সিংড়া পৌরসভার দক্ষিণ দমদমার বালু চরের মাঠে কৃষি উদ্যোক্তা সাগরের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, চারিদিকে বর্ষাকালীন রোপা আমন ধানের মাঝে এক বিঘা জমিতে শোভা পাচ্ছে ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইন জাতের লম্বা আখ। এ জমির প্রায় ৯০ শতাংশ আখ ইতোমধ্যে বিক্রয় করেছেন তিনি।
উদ্যোক্তা সাগর জানায়, আমার নিজের কোন জমি নাই। তিন বছরের জন্য ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে ১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে আখের চাষ করেছি। সেই হিসাবে প্রতি বছর ২২ হাজার টাকা লিজ খরচ সহ অন্যান্য খরচ হয়। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার আখ বিক্রয় করেছি। এতে খরচ বাদে আমার আয় হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এখনো ১৫ হাজার টাকার আখ বিক্রয়ের আশা করছি। তিনি জানান, আখ চাষে প্রথম বছর চারা রোপণ বাবদ খরচ বেশি পড়ে। তাই প্রথম বছর লাভের হিসাবটাও হয় কম। জমিতে একবার চারা রোপন করলে তিন বছর ফসল পাওয়া যায়। সেই হিসাবে আগামী দুই বছরে কম খরচে লাভের হিসাবটা হবে বেশি। একারনেই এ জমি থেকে তিন বছরে গড়ে ৩ লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

সাগর আরো জানায়, আখ চাষের আগে ধান, গম,ভুট্রা ও নানা রকম সবজি চাষ করে তেমন লাভ করতে পারি নাই। গতবছর নাটোরের গুরুদাসপুর থেকে ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইনের চারা সংগ্রহ করে এ জমিতে রোপন করি। জমিতে আমার বাবাই সময় দেন বেশি। আগামীতে জমির পরিমান আরো বাড়াবেন বলে জানান তিনি। এদিকে প্রথম বছরেই সাগরের এমন সফলতা দেখে আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের। অনেকেই আসছেন তার জমিতে। নিচ্ছেন পরামর্শ। সাগরের কাছ থেকে এ জাতের চারা নিয়ে আখের চাষ শুরু করেছেন কেউ কেউ।
উপজেলা কৃষি অফিসার খন্দকার ফরিদ জানান, আখ চাষের জন্য নাটোর জেলা বিখ্যাত হলেও সিংড়া উপজেলায় তুলনামুলক এ ফসল চাষের চাহিদা কম। এবছর এ উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ সবসময়ই কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করছেন। আমরা আশা করছি, আখ চাষীরা লাভবান হবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102