কবি: সাহেলা সার্মিন
মেঠো পথের সেই সোঁদা গন্ধ,
ঝিলে ফোঁটা শাপলার কাব্যিক ছন্দ,
মুঠি ভরা ফুলের সাথে মন মাতানো গান
চোখ বন্ধ করে বসে ভাবলেও ভরে ওঠে প্রাণ।
শাপলা লতায় মালা গেঁথে ফুল দিয়ে পড়েছি দুল
কতো ফুল খোঁপায় গুঁজে শোভিত করেছি চুল।
আশ্বিনের শেষে বিকেলের মিঠা রোদ ক্ষয়ে
ডিঙি ভাসাতাম পাড়ার ছোট ছেলের দল লয়ে।
শাপলার আঁটি আমার হাতে বিস্ময় ভরা মুখে
ছেলের দল জলে নেমে শালুক কুড়াতো মহাসুখে।
বারবার টানে আমায় গায়ের সেই মধুমাখা ক্ষণ
সবুজ প্রকৃতি হাতছানি দেয় ডাকে নাটার বন।
কার্তিকের খোলা মাঠে বিছানো কলমি লতা
কোচ ভরে নিতাম আরো কতো শাক পাতা।
কলমি লতায় বেগুনি ফুল দোল খায় বাতাসে
আমার মন সাথে সাথে দোলে সুখের আভাসে।
কুয়াশা ভেজানো দুর্বাঘাসে মুক্তদানার বল
দু’পা ভিজিয়ে খুশিতে মন হতো ঝলমল।
বিকেল হলেই সব মিলে খেলায় পড়ে যেতো ধুম
কাশফুলের শুভ্রতায় আকাশের নীলে অমলিন।
কুয়াশা ঘেরা শীতের বিকেল তবুও মন টেকেনি ঘরে
সরিষা ফুলের সাথে দস্তি করতে চলে যেতাম সব উড়ে।
ধান কাউনের সবুজ পাতার শীতল পরশ নিয়ে
সরু পথ ধরেই কতো যাতায়াত আলতা রাঙা পায়ে।
কোনো কোনো দিন বিকেল বেলা ইচ্ছে হতো বেশ
বাড়ির পুকুরে ছিপ ফেলে কই,পুটি, বাইন ধরার রেশ।
একটি মাছ বড়শিতে এলে সে কী আনন্দ উল্লাস
বলতে দ্বিধা নেই যে যতোই করো উপহাস!
মাঝে মাঝে বড্ড ইচ্ছে করে সেই দিনগুলোয় ফিরে যেতে
যদি সম্ভব হতো অনেক টাকা জমাতাম ফিরে পেতে।
ঘুরে আসতাম সেই নির্ভেজাল সুন্দর মধুর দিনে
ফেলে আসা সাথীদের সাথে মালা গাঁথতাম সূতো বীনে।