মুহাম্মদ কাউছার আলম রবি।
হিটলার কোনো এক রাতে ছদ্মবেশে বার্লিনের সবচেয়ে অভিজাত সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে গেলেন।
উদ্দেশ্য সিনেমা দেখা নয়। হাফ টাইমে হিটলারের ছবি পর্দায় ফুটে উঠলে সকলে দাঁড়িয়ে সম্মান করছে কিনা, সেটা পরখ করে নেওয়া।
হাফ টাইমে পর্দায় হিটলারের ছবি ভেসে উঠতেই সকলে দাঁড়িয়ে হিটলারের গুণকীর্তন শুরু করে দিলো। হিটলার দাঁড়ালেন না, তিনি নিজেই তো হিটলার। কিন্তু এটা তার মাথায় ছিলো না যে তিনি ছদ্মবেশে এসেছেন, হিটলার বেশে নয়। চারিদিকে হিটলারের জয়ধ্বনি শুনে হিটলার ভীষণ আনন্দিত হয়ে উঠলেন।
হিটলারের পাশে থাকা মানুষটি জয়ধ্বনি দেওয়ার ফাঁকে লক্ষ্য করলেন যে তার পাশের ব্যক্তিটি বসে রয়েছেন।
তিনি ছদ্মবেশী হিটলারের উদ্দেশ্যে বললেন- “দাঁড়িয়ে যাও ভাই, আর হিটলারের জয়ধ্বনি দাও। নইলে শুয়োরের বাচ্চা হিটলার আর তার পোষা কুকুরের দল (নাৎসি বাহিনী) তোমাকে বিপদে ফেলে দেবে।
দেশে দেশে শাসক মহল শোষকে পরিনত হয়েছে। আবু ইসহাকের জোঁকের ভুমিকায় জনসাধারণের সেবক তাঁরা। এডলফ হিটলার রাজ্য জয়ের নেশায় ও বর্ণবাদী আগ্রাসনে লক্ষ লক্ষ প্রাণের ঘাতক হয়ে রাষ্ট্র সেবক হয়েছেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিরা ব্যবসা করতে এসে ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা ভক্ষন করেছে প্রায় দুইশত বছরের জন্য। কেড়ে নিয়েছে এই উপমহাদেশের অর্থ সম্পদ, নষ্ট করে দিয়েছে ভাতৃত্ববোধ। নির্যাতনের স্ট্রীম রোলার চালিয়ে হিন্দু মুসলিম ভাগ করেছে, “ভাগ করো শাসন করো” এই নীতি প্রণয়ন করে। তাদের ও দাবি তারা ভারতীয় উপমহাদেশের সেবক ছিলেন, সেবা করতেই এসেছেন। মীর জাফরদের চরম বিশ্বাসঘাতকতায় যুগে যুগে সিরাজুদ্দৌলারা ক্ষমতায় থাকতে পারিনি। তাদের লোভ আর ক্ষমতার নেশায় দেশ ও জাতির জীবনে অমানিশা নেমে এসেছে। ওরা চরম বিশ্বাসঘাতক হয়ে মুকুটহীন রাজা সেজেছে। হয়তো ওদের আদালতে ওরাও ন্যায়পরায়ন, বিচক্ষণ ও দেশপ্রেমিক ছিলেন। ইংল্যান্ডের অ্যাডাম সুসান, ওশেনিয়ার বড় ভাই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কোরিওলানাস স্নো এবং লাটভেরিয়ার ডক্টর ডুম ওনারাও নিজদের শ্রেষ্ঠ শাসক হিসেবেই ভেবেছেন। রাষ্ট্রীয় সভায় বক্তব্যে বলছেন, “সেবাই আমাদের ব্রত।”
যুগের সীমা ফেরিয়ে আজও জনতার সেবক আছে দেশে দেশে জনগনের সেবায় আজ রাষ্ট্রীয় সেবকদের জয় জয় কার। জনতার জন্য সুশাসন, সমানাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চিত করার জন্যই সেবকরা আজ তৈরি করেছে আয়নাঘর, ইনকাউন্টার, টর্চারসেল, গুম, খুন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ফাঁসি প্রভৃতি। গড়ে তুলেছে কত শত দল মত বাহিনী! যেখানেই তাদের মতের জায়গায় ভিন্ন মত পোষন করা হবে, সেখানেই তাদের চরম সেবা কার্যক্রম চালু হবে। সেবাতো করতেই হবে ওরা যে জনতার সেবক। সর্বোপরি দায়বদ্ধতা বলে একটা বিষয় আছে না?