শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৬ অপরাহ্ন

কটিয়াদীতে সবুজের চাদরে ভরে উঠেছে আমনের মাঠ

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৮ Time View
Oplus_0

রতন ঘোষ,কটিয়াদী প্রতিনিধি:

ধান ক্ষেতের কথা ভাবলেই চোখের পর্দায় ধরা দেয় দিগন্তজোড়া সবুজের সমারোহ। ঝির ঝিরে বাতাসে সবুজের ঢেউ খেলানো সে দৃশ্যে মুগ্ধ হন সবাই। কৃষকের আগামীর সোনালী স্বপ্ন লুকিয়ে আছে সবুজ ধান ক্ষেতের মাঝে।
চারিদিকে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। শরতের রোদ-বৃষ্টির খেলায় সবুজের আভা ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। ফসলের মাঠের কোথাও ফাঁকা নেই, যতদূর দৃষ্টি পড়ে সবুজ আর সবুজ, নীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলা, যেন সবুজের গাঢ় রঙ্গে একাকার হয়ে পড়েছে।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মাঠে মাঠে হাওয়ায় দুলছে আমন ধানের সবুজপাতা, আর আনন্দে দুলছে কৃষকদের মন। কৃষকের মনে উঁকি দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ। সবুজ ঘেরা রোপা আমনের মাঠ দেখে বারবার ফিরে তাকায় কৃষক, থমকে দাঁড়ায় পথিক। নতুন সাজে সেজেছে বাংলার প্রকৃতি।
এবার বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই বৃষ্টি না হওয়ায় রোপা আমন লাগাতে কৃষকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আষাঢ় মাসের মাঝামাঝিতে আমন ধান চাষ করার নিয়ম থাকলেও বৃষ্টি না হওয়ায় তা পারেননি কৃষকরা। ধান রোপন নিয়ে কৃষক পড়ে বিপাকে। দেরীতে বৃষ্টি হলেও ইতিমধ্যে আমন রোপন লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
কটিয়াদী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কটিয়াদী উপজেলায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও, চাষ বেশি হয়েছে। এ পর্যন্ত উপজেলায় ধান চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৫শ ৫০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হজার ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এবারও রোপা আমনের কোন রোগ বালাই না হলে বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা আশা করছেন।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, আমন ধানের ক্ষেত প্রকৃতির খেয়ালে গাঢ় সবুজ রঙ ধারণ করেছে। সবুজে ঘেরা রোপা আমনের মাঠে কৃষক ব্যস্ত সময় পার করছেন। ধানগাছ ভাল রাখতে ও ধানের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকরা ক্ষেতের ঘাস পরিষ্কার, সার ও বালাইনাশক ঔষধ প্রয়োগ ও পার্চিংসহ সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করছেন। মাঝে মধ্যে হচ্ছে বৃষ্টি, আমন আবাদের জন্য আবহাওয়া রয়েছে অনুকূলে। তাই ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে কৃষকরা।
ধানের চারাগুলো থেকে কয়েকদিন পর বের হবে থোর। আর কিছুদিন পরই কৃষকদের আমন ক্ষেতে বের হবে মৌ মৌ গন্ধ। এর পরই সকলের নজর কাড়বে সোনালি ধান। সোনালী স্বপ্নে সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা। গৃহিণীর মুখে ফুটবে হাঁসি।
কটিয়াদী উপজেলার চর পুক্ষিয়া এলাকার কৃষক ইউনুছ ফকির জানায়, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় প্রথমদিকেই শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিয়ে আমন চারা রোপণ করেছি। এতে রোপণে খরচ বেড়েছে। আবার সারের দাম বেড়েছে। ডিজেলের দাম বেড়েছে। চিন্তা হচ্ছে ধানের খরচ উঠাতে পারবো কিনা।
উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের মুগদিয়া গ্রামের কৃষক জহির উদ্দিন বলেন, এবার তীব্র খরার কারনে দেরীতে রোপা আমন লাগাইছি। কিন্তু আমন আবাদের জন্য আবহাওয়া ভালো থাহায় ফসল এহন অনেক ভালো অইছে।
বোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক তাইজ উদ্দিন বলেন, কয়েকদিনেই আমরার ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর অইছে। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ দেহা যায়।
জালালপুর ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন বলেন, বর্তমানে রোপা আমন ধানের ক্ষেত সবুজে ভরে উঠেছে। কৃষি অফিস থেকে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছি। কৃষি অফিসার স্যারের নির্দেশে মাঠপর্যায়ে আমরা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদের সময়মত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি, এবার আমন ক্ষেতে এবার রোগবালাই কম। তাই এবারও ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি।
কটিয়াদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলায় শতভাগ রোপা আমন রোপণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, কটিয়াদী উপজেলায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল যা লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে চাষ বেশি হয়েছে। এ পর্যন্ত উপজেলায় ধান চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৫শ ৫০ হেক্টর জমিতে।
তিনি আরো বলেন, ফলন যাতে ভালো হয়, এই জন্য মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102