লেখক:- ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
“””””””””””””””””””””””””””””
টাকা হলো দ্বিতীয় ঈশ্বর! টাকা ছাড়া তুমি কিছুই না, টাকা আছে তো সব আছে, টাকা না-ই তো কিছুই নাই, মান ইজ্জত সন্মান জ্ঞান পরিচিতি নাম সুনাম যশ খ্যাতি বুদ্ধি বিবেক মাতব্বরি সর্দারী উচ্চ আসন আদর যত্ন হাততালি আরো কত কি!
টাকা নাই তুমি মহাজ্ঞানী কিন্তু কদর নাই, ঘরে বাইরে সমাজে রাস্ট্রে তুমি অপাংতেয়! ঘরের সহধর্মিণী সন্তান আত্মীয় স্বজন সবাই তোমার জ্ঞান জলে ধৌত করে গ্লাস গ্লাস চুমুক দেবে না বরং তুমি নির্বোধ প্রচার করবে! তুমি সৎ কোটি কোটি টাকা ঘুষের সুযোগ ছিলো ভোগ করো নাই, মহিলা গ্রাজুয়েট ইঞ্জিনিয়ার পিএস টাকে নিয়ে সিঙ্গাপুর বা কক্সবাজার পর্যন্ত যাও নাই, তুমি নির্বোধ অপরিনামদর্শী ভন্ড সাধু! তোমার ছেলের স্কুল কলেজর সহপাঠীরা সকালে পাজেরো তে চড়ে কলেজে আসে বিকেলে ভলবো তে চড়ে বাসায় ফেরে তোমার ছেলে রিক্সায় চড়ে স্কুলে আসে বড়জোর তোমার হান্ড্রেড মডেলের গাড়ী খান — ছেলেকে তার বন্ধুরা টিপুনি কাটবে, “কিরে তোর বাবা না বড় অফিসার ডিএস বা ইঞ্জিনিয়ার ফকির কেন? কেন বাসা থেকে লাঞ্চ নিয়ে আসিস, কলেজ ক্যাফেতে কি খাবার কম পড়েছে?
টাকায় বাঘের দুধ মেলে! টাকা ছাড়া খালি কথায় চিড়া ভেজে না! টাকা না থাকলে ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালায়! যার কাছে টাকা আছে লক্ষ্মী বান্ধা তার কাছে! বাক্য টা আমার গুরু জ্ঞান তাপস “ডঃ এমদাদুল হক” বলেছেন, তার নফসে আম্মারা যুক্তি পরামর্শে!
সেই ছেলে মায়ের কাছে ভালো যে মাসে বেতন ছাড়া-ও বেশী কামায়! এক সাথে খেতে বসলে মা তার প্লেটে মাছের মুড়োটা তুলে দেন, না আমি মায়ের স্নেহ ভাগাভাগি করছি না বাস্তবতা বলছি! টাকা থাকলে ভালো জামাই, ভালো দুলা ভাই, ভালো ভাই বোনের কাছে! আপনি ভালো লিখেন, ভালো কবি, আজীবন সৎ এসব মূল্যহীন আপন জন, আত্মীয়স্বজনের কাছে! আপনার শত পান্ডুলিপি পড়ে আছে পয়সার অভাবে ছাপাতে পারছেন না বই, কেউ এগিয়ে আসবে না একটা বই ছাপিয়ে জ্ঞান ছড়াতে মানাবের তরে!
“রূপার চাকতি দু’হাতে বিলিয়ে দাও দাদা সমাজ তোমার পায়ের নিচে এসে হাঁটু গাড়া দিয়ে বসুক” কেদারায় তার বড় ভাই চাদরায় কে বলেছিলেন! এটা একটা যাত্রা পালা! আমি এই পালার নায়িকা ছিলাম! চাঁদ রায় কেদারায় মুঘল আক্রমণ ঠেকাতে বারো ভুঁইয়াদের অন্যতম রাজা ছিলেন। তাদের বিধবা মেয়ে “সোনা” রায় কে ঈসাখাঁ ভালোবেসে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিধবা বিয়ে দিলে সমাজ কি বলবে, তখন ছোট ভাই কেদারায় একথা বলেছিলেন! স্টেজের দেয়া সেই ডায়লগ মুহূর্মুহু করতালি তে কেঁপে উঠেছিলো দর্শকের সারা হল!
টাকা থাকলে সব জায়েজ! নেতা মোড়ল সমাজ সব কেনা যায়! প্রেম প্রীতি জবরদস্তি তে রূপ নেয়! টাকা আছে মদ মহিলা বিচার শালিসি আইন —- সব তোমার!
টাকা আছে হাত-পা কেটে পার পাবে, থানার ওসি চার্জশিট দিতে পারবে না! খুন করে পার পাবে বরং খুন হয় নাই সে আত্মগোপনে আছে, যাকে পোস্টমর্টেম পর চিতায় জ্বালানো হলো সে লাশ অন্যের প্রমান হবে! আমার উপজেলায় এমন ঘটেছে! আজ ও তারা পঙ্গুত্ব বহন করে বেড়াচ্ছে!
টাকা আছে মসজিদে দাও মাদ্রাসায় দাও মন্দিরে দাও, হজ্ব করে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের মত নামের আগে ডক্টরেট তুল্য “আলহাজ্ব” বসায় দাও! একদিন কোন ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম তোমাকে ক্লিনারের চাকুরী দিয়ে জীবন বাচিয়ে ছিলো, কবে গর্তের পরে দুটো বাশ ফেলে টয়লেট করতে কেউ জিজ্ঞেস করবে না, আজতো গ্রামের বাড়ীতে ইংলিশ কমোড বাথটাব, কবে কিভাবে টাকা আয় করেছো তা কেউ খুঁজবে না, একদিন জীবন বাঁচাতে মাটি কাটতে, কামলা দিতে, ট্রেনের তেল চুরি করতে, স্বর্ন চোরাচালানি করতে, ব্যাংকের টাকা লুঠ করেছো সব মানুষ ভুলে যাবে গ্রাম উপজেলায় যেয়ে গোটা দশ গরু জবেহ করে বিরাট খানাপিনার আয়োজন করো কবে কেরানীগঞ্জ ৪৫৯০ জন কয়েদিদের সাথে তোমার বসবাস ছিলো ৩/৪ বছর, বা কাশিম পুর কারাগারে ছিলে তা কেউ মনে ও রাখবে না! তুমি পুত পবিত্র আগামীতে কোন রাজনৈতিক দলকে পঞ্চাশ কোটি দিলে তুমি নিশ্চিত সাংসদ কারন আগেই তুমি দান বীর খেতাব পেয়েছো! মন্ত্রী ও হতে পারো! ইংরেজি তে কথা বলতে পারো না বিদেশি ডেলিগেটদের সাথে সমস্যা নাই, রিস্কলেস মন্ত্রণালয় হচ্ছে “বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ” ১৪,০০০ mw ছিলো কিছু বুঝ না বলে ৫০০০ mw এ নেমে এসেছে তাতে কি, পাবলিক সাফারিং তোমার সমস্যা নাই! তোমার তো আগামী মন্ত্রী হতে পাবলিক ভোট লাগবে না!
আর সেই লোকটা যে তুমি যখন ঢাকা শহরে ইট মাথায় ফুটপাতে ঘুমাতে তোমাকে তুলে নিয়ে কাজ দিয়ে পয়সা দিয়ে বাচিয়ে ছিলো, আজ ডাকাত খুনি হওয়া পর্যন্ত সুযোগ পেয়ে তাকে পদদলিত করে পাশ দিয়ে চলে যাবে কারন সে ব্যক্তি আজ ও বস্তাপঁচা নীতি আদর্শে বুলি আওড়াচ্ছেন দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে এগিয়ে যাচ্ছে কবর মুখী —
তোমার গায়ে ততদিনে কাঁদার গন্ধ তেলের গন্ধ ম্যাক্সি বা আরো দামী সেন্টে মিলিয়ে দিয়েছে সেই বোটকা গন্ধ!
তোমাকে জয়ী করেছে টাকা ঈশ্বর নয়। ঈশ্বর কখনও কখনও টাকার কাছে হেরে যায়, এতদিনে তুমি বংশ পরিচয় ও সৈয়দ মির্জা কাজী করে ফেলেছো নিশ্চয়ই কারন এই একটা মেকি জিনিস পরিবর্তন করতে রক্ত পরিক্ষা বা আদালতের রায় লাগে না!