কলমে: সেখ আলমগীর রহমান
সাগরের তীরে নদী এসে দাঁড়ায় চুপটি করে,
সাগর ভাবে, “কেন আজ সে এমন কথা বলে না মোরে?”
নদীর চোখে কিছুটা বেদনার ছায়া,
সাগর জানতে চায়, “কেন এতো অভিমান? বলো না প্রিয়া?”
নদী তবু নীরব, তার স্রোতে আনে ঢেউ,
সাগর ভাবে, “তুমি কি তবে আমায় ভুলেই গেছো, মেয়?”
সাগর কাছে এসে বলে, “তোমার রাগ বুঝতেই হবে,
তুমি না থাকলে আমার বুকে ঢেউ কি বয়ে যেত তবে?”
নদী কিছু বলে না, জলের মধ্যে লুকায় সব কথা,
তবু সাগর দেখে তার স্রোত হয়ে উঠেছে ভারী ব্যথা।
সাগর বলে, “তোমার কথা জানতেই হবে,
তুমি এভাবে অভিমান করলে আমি তো আর বাঁচব না ভবে!”
নদী এবার ফুঁসে ওঠে, বলে রাগে,
“আমার সঙ্গে এত কথা বলছো কোন অধিকার ভাগে?”
সাগর তখন শান্ত স্বরে বলে,
“তোমার এই রাগ ভাঙানো, আমার কাজ তোলা।”
নদী আরও তীব্র বেগে স্রোত বইয়ে দেয়,
তবু সাগর বলে, “তুমি ছাড়া আমার জলও শুকিয়ে যায়।”
নদীর চোখের জল বয়ে চলে স্রোতের ধারায়,
সাগরের বুকে মিশে সে অভিমান ভুলে হারায়।
সাগর তখন নদীকে বুকে টেনে নেয়,
বলে, “তুমি না এলে আমার ঢেউও থেমে যায়, এ কথা জানো তো তুমি!”
নদীর কান্না ভিজিয়ে দেয় ধরণী,
তার জল সাগরে মিশে গড়ে তোলে নব নব বরণী।
গাছেরা সব প্রাণ ফিরে পায়,
মাছেরা খেলে জলে, সুখের ঢেউ বইয়ে যায়।
নদী হেসে ওঠে দীর্ঘক্ষণ পরে,
তার হাসিতে সাগরের ঢেউ নেচে ওঠে সাগরের কোলে।
সাগর নদীর কপালে একটুখানি চুম্বন খায়,
বলে, “তুমি না থাকলে আমার ঢেউ কি বয়ে যেতো? তাই মাঝে মাঝে কাঁদাই তোমায়।”
নদী বলে, “তুমি কেন এমন করে কাঁদাও আমায়?”
সাগর বলে, “তুমি ছাড়া আমার ঢেউও থেমে যায়,
তোমার কান্নায় আমার বুক ভরে,
তোমার অভিমানে জীবন নত হয় এ সংসারে।”