কলমেঃ সাহেলা সার্মিন
আমার দেহের প্রতিটি রক্ত কণিকা
নয় মাসে মিলিয়ন বিলিয়ন শ্বাস প্রশ্বাস,
আমার দেহের প্রতিটি খাদ্য কণিকা
আর আরাম আয়েশ করেছ নিঃসরণ;
তবুও কতো সুখ ছিলো অন্তর জুড়ে!
কষ্টগুলো খেয়ে ফেলেছি সদা হাস্যজ্জলে।
আরেকবার ফিরে এসো বাবা,
আমার জঠরে!
ঢেলে দেবো দেহের সব রক্ত!
শ্বাস প্রশ্বাসে আগলে রাখবো অতি সন্তর্পণে!
কোনো কষ্ট দেবো না তোমায়!
যা চাও সব দেবো!
জুতা,জামা,ঘড়ি, গাড়ি, এ্যারোপ্রেন
কোন খেলনা চাই বাবা?
সব সব দেবো!
তবুও ফিরে এসো বাবা
ফিরে এসো আমার জঠরে!
সেই ছোট্টটি হয়ে! হাঁটি হাঁটি পা পা,
হাসিতে খুশিতে মুখরিত প্রাণময়
উজ্জ্বল উচ্ছল চঞ্চল সদা!
আম্মু আম্মু ধ্বনিতে পারফিউম সারা বাড়ি ময়!
খেলতে দেবো না বাঁধা,
বেড়াতে নিয়ে যাবো যেখানে যেতে চাও
তোমায় নিয়ে ঘুরবো এগাও থেকে ওগাও!
ফিরে এসো বাবা! একটি সুবোধ চঞ্চল ছেলে হয়ে!
ঘুড়ি বানিয়ে দেবো পরিপাটি করে,
লেখার খাতা সব ছিড়ে,
কৎবেল তলা ঐ খোলা আকাশে
লম্বা সুতো টেনে দেবো
ধরে রাখবে শক্ত করে!
ঘুড়ি উড়বে সুতো টানবে
খুশিতে লাফাবে তুমি,
তোমার খুশিতে খোশবু ছড়াবে
আমাদেরও জুড়াবে অন্তখানি!
সন্ধ্যা হলে পড়তে বসবে লক্ষ্মী ছেলের মতো
একটানা গড়গড় করে বলবে ছড়া
তোতা পাখির মতো,
তোমার সেই মোহনীয় আবৃত্তি যতো
মেঘলা দিনে বৃষ্টির তালে ঝমঝম করে ঝড়তো!
সেই সৃষ্টি নিয়ে ফিরে এসো বাবা,
কতো কতো যুগ ধরে আমি কান পেতে আছি
তোমার সেই ছেলেবেলাটা নিয়েই যেনো বাঁচি!
আমায় ছাড়া তোমার দু’চোখের ঘুম
যেনো খৈ ফোঁটা তারা,
কোলবালিশ সরিয়ে গলা জড়িয়ে পাগল পাড়া।
ঘুমপাড়ানি গান না হলে নামতো না ঘুম
বারবার কপালে দিতে হতো চুম।
সেই ঘুম পাড়ানী গান ভুলিনি আজও
কপালে চুমু দিতে মন হা হা করে আজও!
এসো বাবা ফিরে এসো আবার জঠরে!
ভালোবাসা ভরা মমতা নিয়ে আবার
গলা জড়িয়ে ধরো দু’হাতে,
শান্তি নেমে আসুক আমার পৃথিবীতে!
বি.দ্র. যে সমস্ত ছেলেরা প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে সাদী করে বিভিন্ন কারণে মা-বাবাকে ভুল বুঝে দূরে সরিয়ে রাখে,সেই সব মায়ের আর্তি আমার এই কবিতায়।