আলোচক: ইমদাদুল ইসলাম
(দ্বিভাষিক কবি ও সাহিত্যিক)
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার কবি মোঃ তোহা সেখ বাংলা কাব্য জগতে আবির্ভাব ঘটালেন এক নতুন রীতির অতি ক্ষুদ্র কবিতার। তিনি যার নাম দিয়েছেন কণা কবিতা। দুটি চরণে লেখা মোট চার লাইনের এই ক্ষুদ্র আকারের কবিতায় থাকছে প্রতি প্রথম লাইনে তিন বর্ণ ও দ্বিতীয় লাইনে পাঁচ বর্ণ আর প্রতি চরণে থাকছে মোট আটটি করে বর্ণ। এই নতুন ঘরানার অতি ক্ষুদ্র আকারের কবিতাগুলি কলেবরে ক্ষুদ্র হলেও প্রতিটি কবিতায় থাকছে একটি বিশেষ বার্তা যেখানে ফুটে উঠবে অনুরাগ, প্রকৃতি প্রেম ও সামাজিক সচেতনতার এক নিগূঢ় আভাস বাণী।
আশা করি কবি মোঃ তোহা সেখের এই নতুন কাব্য রীতি সাড়া ফেলবে আমাদের ভারত বাংলাদেশের বাংলা ভাষাভাষী কবিদের কবিতা চর্চার অঙ্গনেও। তাঁর এই কবিতাগুলি খুব শীঘ্রই একটি বইয়ে ছাপা হচ্ছে তিনি যার নামও দিয়েছেন “কণা”। আমি একজন সাহিত্যপ্রেমী হিসাবে তাঁর এই নতুন কাব্য ঘরানার তারিফ করি এবং এই সমাজ সচেতন প্রতিবাদী কবির দীর্ঘায়ু কামনা করি।
কবির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
দুই বাংলার পত্র-পত্রিকা ও বাংলা সাহিত্য জগতে মোঃ তোহা সেখ একজন দীপ্তিমান সাহিত্যিক যাঁর জন্ম ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ২রা অক্টোবর মুর্শিদাবাদ জেলার আহিরণ গ্রামে। তিনি পিতা-মাতার ৮ম সন্তান। কবির পিতার নাম ইয়াসিন সেখ ও মাতা-আসেমা বিবি । কবির স্ত্রী সেরিনা পারভীন এর অনুপ্রেরণায় তাঁর সাহিত্যের কলম এক আলোকময় দিশা খুঁজে পায়। অনুতপ্ত সংগ্রামী লেখক অত্যন্ত কম বয়সে তাঁর মা-কে হারিয়ে ইহকাল জীবন শুন্য হওয়ার কারণে কর্মের সন্ধানে গৃহ ত্যাগ করেন। পড়াশুনা, কবিতা লেখা অর্থ উপার্জন করা এবং ঘাত-প্রতিঘাত ও লড়াইয়ের মধ্যে কবি জঙ্গিপুর কলেজে থেকেই তাঁর পড়াশুনা শেষ করেন। অর্থের প্রয়োজনে প্রথমে ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা এবং পরবর্তীকালে কেবল লাইন ও কাপড়ের ব্যবসায় মনোযোগী হন। কবিকে ত্রিশঙ্কু লড়াই এর সম্মুখীন হতে হয়েছে বারংবার। নাভিশ্বাস ও জটিল ব্যস্ততার মাঝে কবিতা লেখায় ছিল তাঁর আলাদা সুখ।
কবির প্রথম প্রকাশিত বই “পল্লীর ফুল” ২০০২ সালে ও দ্বিতীয় বই “নলেজ দর্পণ” এবং তৃতীয় বই “কথা ও কবিতা” ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি এই ‘কথা ও কবিতা’ বই এর উপর বিশ্ব মানব শিক্ষা নামক সংস্থা থেকে সাম্মানিক ডক্টরেট সম্মাননায় সম্মানিত হয়েছেন। এছাড়াও কবি আটটি দেশের সার্ক সম্মেলনে সার্ক সম্মাননা, রাজা রাম মোহন স্মৃতি পুরস্কার, নূর সম্মাননা ও মহাপ্রাণ স্মারক সম্মানে ভূষিত এবং তারাশঙ্কর সম্মাননা ও দাদা ঠাকুর সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন, এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে বিশেষ স্বর্ণপদক প্রদানের মাধ্যমে তাঁকে সাহিত্যিক হিসাবে সম্মানিত করা হয়েছে।