মিশর ভ্রমণে আজ আমাদের দ্বিতীয় দিন।
সবে ভোর ভেঙে দিনের আলো ফুটতে শুরু করেছে।ক্রীং ক্রীং শব্দেে ইন্টারকমে রিং হচ্ছে।বন্ধু(৫২ টিভির সম্পাদক) লুৎফুর ছাড়া আর কে হবে? ঢুলু ঢুলু চোখে রিসিভার কানে ধরলাম।
-হ্যালো,ফরহাদ রাতে ঘুম কেমন হল ?
আমি বললাম,বেশ ভাল।তুমি এত সকালে কেন ঘুমের পিছে পড়লে?
-তোমার জন্য সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরে দেখো।আরে দেখো দেখো।ঘুরতে এসে ঘুমালে চলবে?
কানে রিসিভার রেখেই জানালার ভারী ভেলভেটের পর্দা সরিয়ে আমার চক্ষু ছানাবড়া।আনন্দের আতিশয্যে ওয়াও বলে চিৎকার করে উঠলাম।হোটেলের অনতিদূরেই সারি বাঁধা পিরামিড যেন আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।লুৎফুর বলল,আমি ফোন রাখছি। জাস্ট দশমিনিট পর আমাদের ব্যুফে ব্রেকফাস্ট ওপেন হবে।রুফটপে বসে নাস্তার সাথে সাথে উপভোগ করবো পিরামিডের সৌন্দর্য।
আমিও রিসিভারটি নামিয়ে দ্রুত প্রস্তুত হয়ে রুফটপে চলে এলাম।পুরু নীলকাচে মোড়ানো হোটেলের রুফটপে ব্যুফে ব্রেকফাস্টের ব্যবস্থা, যাতে অতিথিরা এখানে বসে পিরামিডের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।সকালের মিষ্টি রোদ পিরামিডের উপর পড়ে তার প্রতিফলিত আলো যেন গোটা এলাকায় বিচ্ছুরিত হচ্ছে।হোটেলের সারি সারি সাজানো ব্যুফে খাবার আর মুখে উঠছে না।কত দ্রুত নিচে গিয়ে পিরামিড ছুঁয়ে দেখব তার জন্য আর তর সইছে না।
সংক্ষেপে নাস্তা সেরে রুমে গিয়ে তৈরী হলাম।দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করে দু’স্তরের নিরাপত্তা গেট পার হয়ে পিরামিডের পথে পা বাড়ালাম।পিরামিড এলাকায় প্রবেশ মূল্য ২০০ ইজিপশিয়ান পাউন্ড এবং গ্রেট পিরামিডের ভিতরে প্রবেশের জন্য গুণতে হবে আরো চার’শ ইজিপশিয়ান পাউন্ড।অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এবং এপ্রিল-সেপ্টেম্বরের মাসে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে।কিছুটা নিচু ভুমি থেকে ক্রমে উপরের দিকে উঠে গেছে পিরামিড এলাকা।
চত্ত্বরে প্রবেশের পর প্রথম আমাদের চোখ আটকে গেল গ্রেট স্ফিংস ভাস্কর্যের উপর।এটি খাফ্রার পিরামিডের বাইরের দিকে পূর্ব দিকে মুখ করে আছে।
গ্রিক ও মিশরীয় সভ্যতায় স্ফিংসের বর্ণনা পাওয়া যায়।গ্রিসে স্ফিংসকে নরকের প্রহরী মানা হলেও মিশরে একে উপকারী দেবতা মনে করা হতো। এর শরীরের পেছনের অংশ সিংহের মত,পিঠে পাখির মতো বড় ডানা এবং মুখমন্ডল সাধারণত মানুষের মুখসদৃশ। এককথায় গ্রেট স্ফিংস হল-সিংহের শরীরে মানুষের মাথা সম্বলিত পাথরের বিশাল এক ভাস্কর্য।
গ্রেট স্ফিংসের সবচেয়ে বড় আশ্চর্য হলো এর বিশাল আকার।দৈর্ঘ্যে ৭৩.৫ মিটার (২৪১ ফুট),প্রস্থে ৬ মিটার (২০ ফুট) এবং উচ্চতায় ২০.২২ মিটার (৬৬.৩৪ ফুট)।এর পায়ের থাবা গুলো ১৫ মিটার (৫০ ফুট) দীর্ঘ;মাথার দৈর্ঘ্য ১০ মিটার (৩০ ফুট) আর ৪ মিটার প্রশস্ত।অবাক করার বিষয় হল বৃহৎ এই ভাস্কর্যটি একটিমাত্র বিশালাকৃতির চুনাপাথরের খন্ড খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে যার ওজন আনুমানিক ৩০ হাজার কেজি থেকে ৭০ হাজার কেজি।ছোট কোনো দ্বিতীয় খন্ড এর সাথে যুক্ত করা হয়নি।একারণে গ্রেট স্ফিংসের ভাস্কর্যটিই পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মনোলিথিক ভাস্কর্য।মনুমেন্টাল ভাষ্কর্যের মধ্যে এটিই সবচেয়ে প্রাচীন।
প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরাতন গ্রেট স্ফিংস ভাস্কর্যটি আমরা ২০২৪ সালে যেভাবে দেখছি গবেষকদের মতে এটি শতভাগ অবিকৃত নেই।কালের পরিবর্তনে স্ফিংসের মূল আকৃতির কিছু পরিবর্তন হয়েছে।স্ফিংসের ১ মিটার লম্বা নাকটি আজ আর নেই; কথিত আছে নেপোলিয়নের সৈন্যরা গ্রেট স্ফিংসকে নিশানা বানিয়ে কামানের গোলা ছুঁড়েছিল।ফারাও এর প্রতিমূর্তি স্বরূপ গ্রেট স্ফিংসের দাঁড়ি ও ছিল;কিন্তু বহুদিন আগেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে সেসব।গুটানো অবস্থায় একটি লেজও আছে এই স্ফিংসের।অনেকে মনে করেন, স্ফিংসের মুখাবয়ব রাজা খুফুর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
যাহোক মূল গেট থেকে স্ফিংস হয়ে পিরামিড পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যাওয়া কিছুটা কষ্টকর বটে।তবে উটে বা ঘোড়ায় চড়েও যাওয়া যায়। অবশ্যই আগে থেকে দরদাম করে নিয়ে চড়তে হবে।স্ফিংস পার হয়ে পিরামিডের পথ ধরলাম।হাতে বিস্তর সময়, তাই ঘোড়ায় না চড়িয়া মর্দ হাঁটিয়া চলিল।হাঁটতে হাঁটতে গভীর নস্টালজিয়ায় ডুবে গেলাম।পিরামিড পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তম আশ্চর্যের একটি।ভাবছি পাঁচ হাজার বছর পূর্বের তৎকালীন প্রচন্ড প্রতাপশালী ক্ষমতাবান,বিদ্বান,শৌর্য বীর্যবান আধুনিক মানুষেরা যে পথ ধরে হাঁটতেন পাঁচ হাজার বছর পর আমি এক বাঙালী সন্তান সেই পথের ধুলো মেখে হাঁটছি।হাঁটতে হাঁটতে আমরা গ্রেট পিরামিডের কাছাকাছি চলে এসেছি।মনে হয় দিগন্ত জোড়া স্থাপত্য।গ্রেট পিরামিডের উচ্চতা চূড়াসহ প্রায় ৪৮১ ফুট যা ৪২ তলা ভবনের সমান।এটি প্রায় ৫ হাজার বর্গমিটার জায়গা জুড়ে আছে।অর্থাৎ অন্তত ৬ টি বড় ফুটবল মাঠের জায়গার সমান।এটি তৈরি করতে ৪০ হাজার শ্রমিকের টানা ২৭ বছর সময় লেগেছিল।ধারণা করা হয়,চতুর্থ রাজবংশের দ্বিতীয় রাজা খুফুর সমাধি এটি।ফারাও রাজাদের সকলকে ফেরাউন বলা হত।প্রত্যেক ফেরাউন তার আগের ফেরাউনের চেয়ে সেরা পিরামিড তৈরি করতে চাইতো।তাদের বিশ্বাস ছিল ফেরাউনদের মৃত্যুর পর মৃতদের রাজা হিসেবে তাদের অভিষেক ঘটবে।তাদের মতে পিরামিড ছিল ফেরাউনদের পুনর্জন্মের প্রবেশদ্বার।তারা বিশ্বাস করতো মৃত্যুর পর যতদিন তাদের দেহ সংরক্ষণ করা যাবে ততদিন তারা স্বর্গে বাস করবে।তাই অমরত্বের আশায় একজন মানুষের সমাধির জন্য এই বিশাল আয়োজন। ৪ হাজার ৭০০ বছর ধরে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে এই পিরামিড যা ১৯ শতক (আইফেল টাওয়ার তৈরির পূর্ব) পর্যন্ত মানুষের তৈরি উচ্চতম স্থাপত্য হিসেবে ধরা হতো।পিরামিডের স্থায়িত্ব সম্পর্কে একটি আরবী প্রবাদ আছে “মানুষ সময়কে ভয় পায়, আর সময় বা মহাকাল ভয় পায় পিরামিডকে”।
ধারণা করা হয়,প্রথম মিরামিড তৈরির প্রকৌশলী ও স্থপতি আমেনহোটেব, যিনি প্রথম পিরামিড নির্মাণকারী রাজা জোসারের মন্ত্রী।তিনি জ্যোতির্বিদ ও চিকিৎসা শাস্ত্রে পন্ডিত ছিলেন। পিরামিডের নির্মাতা কে হতে পারে এ বিষয়টি যত গুরুত্বপূর্ণ তার চেয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গবেষকদের মাথায় আজো ঘুরপাক খাচ্ছে যেমন, (১)গ্রেট পিরামিড বা খুফুর পিরামিড নির্মাণ করতে ২৩ লক্ষ ব্লক ব্যবহার করা হয়েছে যার প্রত্যেকটি ওজন ২৭ মেট্রিক টন থেকে ৭০ মেট্রিক টন পর্যন্ত।(২) এ ব্লক বা পাথরের টুকরাগুলো যেভাবে নিখুঁত ও পলিশ করে কাটা হয়েছে এটা অত্যাধুনিক সময়ের লোহা কাটা মেশিনে ও সম্ভব নয়।(৩)বর্তমান সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্রেন দিয়ে ২০ টন ওজনের বস্তু একশ মিটার পর্যন্ত উঁচুতে তোলা সম্ভব,অথচ ৭০ মেট্রিক টন ভারী পাথর দেড়শ মিটার উপরে কিভাবে সুনিপুণভাবে স্থাপন করা হয়েছে তা সত্যি বিস্ময়কর।(৪)আমরা জানি মিশরীয়রাই সর্বপ্রথম জ্যামিতি আবিষ্কার করেন,কিন্তু আজ থেকে ৫০০ বছর আগে আধুনিক জ্যামিতির আবিষ্কার হয়।বহুভূজের উপর সমান্তরাল ত্রিভুজাকৃতি পিরামিড তিনটি একটি শীর্ষ বিন্দুতে মিলিত হয়েছে।যা অত্যন্ত সুনিপুণ হাতে জ্যামিতি ব্যবহার করে পিরামিডগুলো নির্মাণ করা হয়েছে বলে প্রমাণ দেয়। গিজার তিনটি পিরামিড আকাশের উজ্জ্বল তিনটি তারকার সমান্তরালে স্থাপন করা হয়েছে।(৫) মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় সব সময় দেখা যায় যে লু হাওয়া অত্যন্ত বেশি তাপমাত্রা কিন্তু পিরামিডের মধ্যে সব সময় বিশ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা মানে এয়ারকন্ডিশন।(৬)এ পিরামিড গুলো রড বালু ছাড়া নির্মাণ করা হয়েছে যা প্রায় ৫ হাজার বছর সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে রড সিমেন্ট কংক্রিটের ভবন সর্বোচ্চ ১৫০ বছর টেকসই হয়। (৭)এ পিরামিডগুলো যখন আবিষ্কার করা হয় তখনকার মানুষের উচ্চতা ছিল সর্বোচ্চ ১০ ফুট (বর্তমান ফেরাউনদের লাশ এখনো মিশরে অক্ষত আছে যাদের দৈর্ঘ্য ৮ ফুটের উপরে নয়)।এতো কম উচ্চতার মানুষ কিভাবে এত বড়ো পাথর প্রায় ৪২ তলা বিল্ডিং এর সমান উচ্চতায় স্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল?(৮) বিজ্ঞানীদের গবেষণা মতে,প্রায় ৫০০ মাইল দূরের পাহাড় থেকে এই পাথর এখানে আনা হয়েছে।যা আধুনিক যুগের ক্রেন,লরি ও জাহাজ দিয়ে বহন করা সম্ভব নয়।তাহলে কিভাবে এত বড় পাথরের ব্লক পরিবহন করা হয়েছিল?এমন অসংখ্য অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এখনো প্রত্নতত্ত্ববিদেরা গবেষণা করছেন।অবাক বিস্ময় নিয়ে আমরা প্রবেশ করলাম বৃহৎ পিরামিডের অভ্যন্তরে।রোমাঞ্চকর অনুভূতি অনুভব করলাম।মাত্র তিনফুট প্রশস্ত সুড়ঙ্গ বেয়ে মাথা ৯০ ডিগ্রি নিচু করে দেড়শ ফুট নিচে নামতে হলো যা আমার মতো মেদ বহুল মানুষের পক্ষে নিতান্তই কষ্টকর।মাঝখানে কাঠের সিঁড়িতে বসে পড়লাম একটু সময় নিয়ে ছবি তুলে আবার নামলাম।যদিও আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে তবুও তা ঘুটঘুটে অন্ধকারের তুলনায় অপ্রতুল। দেওয়ালে হায়ারো গ্লিফিক্স বা ছবি দিয়ে লেখা নানা দুর্বোধ্য বাণী।মিশরে টিকে থাকা ৭৫ টি পিরামিডের অন্ততঃ পক্ষে ১১টি পিরামিডের ভেতর এমন লেখা খোদাই করা আছে।এর মর্মার্থ না বুঝলেও গবেষকদের ধারণা কোনো ধর্মীয় শেষকৃত্যের বাণী এসব।আছে পাথরের মূর্তি সম্বলিত তিনটি পৃথক চেম্বার,গ্রান্ড চেম্বার,কুইন চেম্বার ও কিং চেম্বার।কিং চেম্বারে গিয়ে নতুন ভাবনার সূত্রপাত হলো যা গবেষকদের ও ঘুম হারাম করেছে।কিং চেম্বারে রয়েছে মস্ত বড়ো গ্রানাইট পাথরের কফিন।কিন্তু এত ছোট সুরঙ্গ পথ দিয়ে কিভাবে এই বড় কফিন ভেতর আনা সম্ভব হয়েছিল।এই রহস্যের মীমাংসা আজও হয়নি।তার চেয়ে বড় রহস্য এই পিরামিডের ভেতর আসলে কোন মমির সন্ধান পাওয়া যায়নি। পিরামিডের গ্র্যান্ড গ্যালারির ওপর প্রায় ৩০ মিটার বা ১০০ ফুট লম্বা একটি করিডোর যা রাণীর কক্ষকে রাজার কক্ষের সঙ্গে যুক্ত করেছে।বৈজ্ঞানিকরা এখনও বুঝতে পারেননি, কেন ওই খালি স্থান রাখা হয়েছে, তবে ওই করিডোরে পৌঁছানোর কোনও রাস্তা নেই।তার অপর পাশে আসলে কি আছে পাথর ছিদ্র করে মিউওন টমোগ্রাফি এবং ইনফ্রারেড থার্মোগ্রাফির মতো উন্নত স্ক্যানিং কৌশলগুলির ব্যবহার করেও রহস্যের সমাধান করা যায়নি।বিষয়গুলি ঘেরাটোপের মত।একটা রহস্য আরেকটি রহস্যের সৃষ্টি করে বহু রহস্যের জাল বিছিয়েছে।এই পিরামিডের পূর্ব দিকে আছে আরও তিনটি ছোট পিরামিড।এগুলোকে বলা হয় রাণীর পিরামিড।ফারাও খুফুর স্ত্রীর সম্মানে এগুলো বানানো হয়েছিল।পরবর্তী এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম পিরামিডটি তৈরি করা হয়েছিল ফারাও কাফ্রের সম্মানে।ফারাও কাফ্রে ছিল ফারাও খুফুর সন্তান।প্রায় ২ হাজার ৫৭০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই পিরামিডের কাজ শেষ হয়েছিল। সবচেয়ে ছোট এবং সবশেষে নির্মিত পিরামিডটি ফারাও মেনকাউরের।এটির নির্মাণকাজ সম্ভবত ২ হাজার ৫১০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে শেষ হয়েছিল।
মিশরের গিজা হারাম এলাকায় অবস্থিত এই পিরামিড শেষ কথা নয়, এখান থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আরো একটি এলাকা। যার নাম গিজা সাকারা।সেখানে রয়েছে প্রথম পিরামিড নির্মাতা রাজা জোসারের ও রাজা তিতির পিরামিড। মিশরে প্রায় ১০০ পিরামিডের অস্তিত্ব পাওয়া যায় যার মধ্যে প্রায় ২৫টি ধ্বংস হয়ে গেছে। সময় যত গড়িয়েছে ততই পিরামিড তৈরির আধুনিক কায়দা কানুন তারা আয়ত্ত্ব করেছিল। আসলে কি একজন মানুষকে সমাহিত করতে এত বড় বিশাল আয়োজন করেছিল কোনো একজন রাজা।নাকি ভিন্ন কোন উদ্দেশ্য ছিল।আসলেই কি তৎকালীন মানুষের পক্ষে এই আধুনিক স্থাপনা তৈরী সম্ভব ছিল নাকি ভিন গ্রহের কোন জীব এই অসাধ্য সাধন করেছিল।এত সব সমাধানহীন প্রশ্ন মাথায় নিয়ে গিজা হারামের পিরামিড এলাকা আমাদের ছাড়তে হল। বন্ধু লুৎফুর গাইডকে জিজ্ঞেস করল,পরবর্তী গন্তব্য কোনটি?
গাইড সংক্ষেপে উত্তর দিল, নীলনদ।
গাইডের কথায় পরবর্তী গন্তব্য নীলনদের আহ্বান অনুভব করলাম।
ফেরার পথে পা আর কথা শুনছিল না।তেজী ঘোড়ার পিঠে চড়ে ফিরে আসার পথে শেষবারের মত উপভোগ করলাম ধুধু মরুর বুকে সহস্রাব্দের বিস্ময়কর নিদর্শন পিরামিড।
লেখক, ফরহাদ হুসাইন
কাতার দূতাবাস, আবুধাবী