নিজস্ব সংবাদদাতা:
সাংবাদিক হারুন অর রশিদ চিকিৎসা ধীন অবস্থায় শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় নগরীর আদদ্বীন হাসপাতালে ইহজগতের মায়া ছিন্ন করে না ফেরার দেশে চলে যান।তিনি দীর্ঘদিন ধরেই তিনি কিডনি রোগে ভুগছিলেন।গত ২ ডিসেম্বর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ১৩ ডিসেম্বর কিডনি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি হলে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সাংবাদিক হারুন অর রশিদ খুলনা প্রেসক্লাব ও মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সাবেক নির্বাহী সদস্য ও দৈনিক জন্মভূমির সিনিয়র রিপোর্টার ছিলেন।খুলনার সংবাদপত্র অঙ্গনে অত্যন্ত নিরীহ এবং সৎ সাংবাদিক হিসেবে জীবন যাপন করেছেন।তিনি খুলনা আর্ট একাডেমির এই দীর্ঘ যাত্রায় সব সময় সঙ্গে থেকে সহযোগিতা করেছেন,তার অকাল প্রয়াণে খুলনা আর্ট একাডেমি গভীরভাবে শোকাহত। হারুন অর রশিদের মরদেহ গ্ৰামের বাড়ি মোড়লগঞ্জে নেওয়া হয়েছে। সেখানে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হবে।
খুলনা আর্ট একাডেমির সঙ্গে সম্পর্কঃ
শ্রদ্ধেয় অতি প্রিয় হারুন অর রশিদ খুলনা জন্মভূমির একজন প্রবীণ সাংবাদিক যার হাতে ছোট্ট একটু প্যাড এবং কলম সঙ্গে নিয়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করে প্রকাশ করাই ছিল তার পেশা। আমি তার মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত কারণ খুলনা আর্ট একাডেমি প্রতিষ্ঠা কালীন থেকে এই প্রতিষ্ঠানের সুনামের জন্য তিনি নিজ দায়িত্বে সব সময় তথ্য প্রকাশ করতেন।সাংস্কৃতিক জগতে তার হাত ধরে আমার অনেক কবিতা গল্প প্রকাশিত হয়েছে। আমি ২০০২ সালে যখন আর্ট কলেজে পড়াশোনা করি তখনকারে আর্ট কলেজ কে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ছাত্রদের যে আন্দোলনের দাবি সেই দাবি প্রকাশ করতেন। তখন তিনি দৈনিক অনির্বাণ পত্রিকায় নিয়োজিত ছিলেন, পরবর্তীতে খুলনা অঞ্চলে যোগদান করেন। সেখানেও যোগদান করে আমার সঙ্গে এসে দেখা করে আমাকে আমন্ত্রণ জানায় এবং খুলনা আর্ট একাডেমির সকল অনুষ্ঠানের মেইল যেন তাকে আমি পাঠাই। পরবর্তীতে দৈনিক জন্মভূমিতে যোগদান করেন। তার কথা আমি লিখে শেষ করতে পারবো না। আমাদের নিউজ প্রকাশ করে সৌজন্য সংখ্যা আমার অফিসে দিয়ে যেতেন নিজের হাতে আর এক কাপ চা খেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বিদায় নিতেন। আমি তাকে জোর করে যাতায়াত খরচটা কখনো দিতে পারিনি ।আমাকে বলতেন আপনি একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন আপনি দেশের জন্য ভালো কাজ করেন আপনার কাছ থেকে আমি কোন অর্থনৈতিক লেনদেন করবো না। আপনার কাছ থেকে দেখা হলে চা খেলে আমার ভালো লাগাটা পূর্ণ হয় ।আমি হয়তো বাড়িয়ে বলিনি এটা খুলনার সাংবাদিক ভাইয়েরা তার সম্পর্কে ভালো জানেন। তিনি কেমন ধরনের মানুষ ছিলেন। আমাদের হারুন ভাই যেন আমার পিতার বয়সী একজন মানুষ কিন্তু আমার ছাত্র জীবনে পরিচয় থেকে আমাকে দূর থেকে দেখা হলেই হাতজোড় করে ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ করতেন। কেমন আছেন গুরু এ নিয়ে আমি তাকে অভিযোগও করেছি কিন্তু কখনো বন্ধ করতে পারিনি ।আমার অভিযোগে তিনি বলেছিলেন সবাইকে তো আমি বলি না।আমি যাকে বলছি তিনি আমার স্থান থেকে গুরুর যোগ্যতা তার মধ্যে আছে। জানিনা কি পেয়েছিল আমার মাঝে।২০ ডিসেম্বর রাতে হারুন ভাইকে নিয়ে একটি অসুস্থতার ভিডিও সাংবাদিক ভাইয়েরা পোস্ট করে তাকে আদ্বদীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ।প্রবাহের সাংবাদিক মিন্টু ভাই তাকে নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন সকালে আমি পোস্টে কমেন্ট করেছি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু দুপুর পার হতে না হতে সমাজের আরো একজন প্রিয় মানুষ সমাজকর্মী আমাদের দেলোয়ার ভাইয়ের পোস্টটি দেখে আমি খুবই কষ্ট পেলাম । তারপরেই আবারো মিন্টু সাংবাদিকের সাইড থেকে হারুন ভাইয়ের শোক বার্তাটি আমার সম্মুখে চলে আসলো ।তখনই নিশ্চিত হলাম আর কখনো দেখা হবে না আর কখনো আমাকে জড়িয়ে ধরবে না। আমি তার জন্য সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন জান্নাত বাসী হতে পারেন এবং তার পরিবারের সন্তান এবং তার সহধর্মিনী যেন এই শোক কাটিয়ে তার আদর্শ ধারণ করে সন্তানদের মানুষ করে তুলতে পারেন। খুলনা আর্ট একাডেমির পরিবারের পক্ষ থেকে ভাইয়ের পরিবারের প্রতি ভালবাসা সারা জীবনের জন্য থাকবে। প্রিয় ভাই ভালো থাকবেন ওপারে। ভাইয়ের সহধর্মিনী ও রেখে যাওয়া তাদের সন্তান এবং স্বজনরা যেন এই শোক কাটিয়ে পুনরায় সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারেন এমন প্রত্যাশা করেন খুলনা আর্ট একাডেমির পরিবার।