বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১২ অপরাহ্ন

প্রণয় প্রীতি “” সাহেলা সার্মিন

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৪৭ Time View

মানুষ যেমনই হোক না কেনো; রাগী, বদমেজাজী, রুক্ষ, শান্ত,অশান্ত, চঞ্চল এসব ভেদ করে এক গোপন রূপ যত্নেই হোক আর অযত্নেই হোক তার ভিতরে লালিত হয়। সেই রূপটা কী জানেন? সেটা হচ্ছে প্রেম,প্রণয়, প্রীতি। এটা সবার ভিতরেই কম বেশী বিরাজমান। কিন্তু ব্যবহারের ক্ষেত্র একেক জনের একেক রকম। কারো মা-বাবার প্রতি, কারো সন্তানের প্রতি, কারো ভাই-বোনের প্রতি, কারো নিজ স্ত্রীর প্রতি এই ভালোবাসাটা জেগে ওঠে।

আসলে এটি একটি মায়া। এই মায়াটা জন্মাতে পারে সৌন্দর্যবোধ থেকে বা তার জীবনের কোনো একটা দিকের মহত্ত্ব সম্পর্কে ভালো লাগা থেকে। এটা যে কোনো বয়সেই হতে পারে। তবে এই মায়া বা প্রেম থেকে মানুষ সুখের চেয়ে দুঃখ বেশী পায়। শান্তির চেয়ে অশান্তি বেশী পায়, আরামের চেয়ে কষ্ট বেশী পায়। তবুও মানুষ প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। ভালোলাগা বিপরীত জনের প্রতি প্রবল আকর্ষণ ফিল করে।

মা-বাবা, ভাই-বোন ও নিজ স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসাতে সুখ আছে। স্ত্রীর প্রতি যত আকর্ষণ থাকবে, যত ভালোবাসবে, সুখ শান্তি ততই বাড়বে। কিন্তু অবৈধ প্রেমে মানুষ নিঃস্ব হয়ে যায়। নিঃস্ব হয় ভিতরে ভিতরে,নিঃস্ব হয় দৈন্যতায়। সেখানে ডালপালা গজিয়ে সামাজিক ও পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়। অশান্তির ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে দ্বগ্ধ হতে থাকে। ভালোবাসার মানুষের দ্বারাও এক সময় ক্ষত বিক্ষত হতে হয়।

সহকর্মীর প্রেমে পড়ে অনেকেই। প্রেমে পড়ে অধিনস্ত কর্মচারী বা পি এস এর। এদের মধ্যে অনেকেই আছে সুবিধাবাদী। নিজ স্বার্থের জন্য বসের গায়ে পড়ে প্রেমের অভিনয় করে। বসকে দুর্বল করে তোলার সকল প্রয়াস চালায়। এক সময় সফলও হয়।

সফল হওয়ার পেছনে কারণ আছে। নারীর সৌন্দর্য ও ষোলো কলায় পুরুষ সহজেই প্রেমে পড়ে। পুরুষের দৃষ্টি নারীর নিতম্ব, উরু, শূর্পণখা ও বাঁকা দৃষ্টিতে। নারী ইচ্ছে করলে ডুবাতে পারে পুরুষকে, আবার ভালোও বাসতে পারে। আর পুরুষ? ভালোবাসতে পারে আবার ভেঙে টুকরো টুকরোও করতে পারে। তবে নারীর প্রতি সহানুভূতি ও দুর্বলতা প্রকাশ করা পুরুষের সংখ্যাই বেশী। কিছু নারী সেই সুযোগ নেয়।

আগে বিভিন্ন অফিস আদালতে এসব দেখা যেতো। এখন স্কুল কলেজেও এসব ঢুকে গেছে। কলেজের প্রিন্সিপাল সদ্য জয়েন করা আনমেরিড টিচারের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে রুমের দড়জা জানালার পর্দা নামিয়ে দু’জন একান্তে গল্প করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কলেজ ছুটি হয়ে গেলেও তাদের কথা শেষ হয় না। পিয়নরা কানা-ঘসা করে তাও তাদের কর্ণে পৌঁছায় না। এভাবেই টোপ ফেলে একটা একটা করে সব রকমের ফ্যাসিলিটি নিচ্ছে প্রন্সিপালের কাছ থেকে। কে কী বললো, তাতে তার কিচ্ছু যায় আসে না। এ রকম মেয়ের সংখ্যাও কম নয় আমাদের সমাজে।

এরকম টাউট মেয়েরা সচারাচর বিপদে পড়ে না। বিপদে পড়ে সহজ সরল গোবেচারি মেয়েরা। সেই শেয়ালের কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার মতো। তাই নিতান্ত ভালো মানুষের এই বাজারে কদর কম। নষ্টামিতে ছেয়ে গেছে দেশটা। আজকাল নষ্টের কদর্যকে মানুষ সৌন্দর্য ভাবে। তার পেছনে দাঁড়িওয়ালা টুপি ওয়ালারাও হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ধর্মও আজ শো কোল্ড। বাহিরে ধার্মিক ভালো মানসি অন্তরে পঁচা গোবর।

স্কুল, মাদ্রাসায় ষষ্ঠ, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলেমেয়েরাও আজকাল প্রেম করে। ক্লাসের ভিতরে চিরকুট লিখে মেয়েদের দিকে ছুঁড়ে দেয। কী অবাক কাণ্ড! এদের বয়স কতো হয়েছে? এসব হয়েছে ফেসবুকের বদৌলতে। বাচ্চারা লেখাপড়া করবে কখন, কিভাবে? পরিবারের সবার হাতেই মোবাইল ফোন। কাজে হোক,আড্ডায় হোক, বিনোদনে হোক ; হাতের মুঠোয় অথবা হাতের কাছেই থাকে ফোন। বাচ্চার দৃষ্টি সেদিকেই নিবিষ্ট থাকে। তারপর তাকে দিতে না চাইলেও পালিয়ে, লুকিয়ে সেটা ইচ্ছেমত দেখবে। আর একটু বড় হতে না হতেই মা-বাবাকে চাপ দেবে ফোন কিনে দেওয়ার জন্য। কোনো কোনো ছেলেমেয়ে কোনো একটা বিষয় জিম্মি করে মা-বাবার কাছ থেকে জোর করে ফোন আদায় করে। তারপর ফোনের আসক্ত থেকে নিজেকে আর রক্ষা করতে পারে না। মেয়ে বন্ধুর সাথে চ্যাটিংয়েও আসক্ত হয়। শিক্ষা জীবন শেষ করার আগেই অনেক রকম দুর্ঘটনা ঘটে যায় তার জীবনে।

নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা শিখতে হবে।ধৈর্য আর অধ্যাবসায় জীবনের জন্য খুবই জরুরি। কখনোই লিমিট ক্রস করা উচিৎ নয়। যে কোনো কাজ একাধিক বার ভেবে করা উচিত। প্রেম আসবেই। সেটাতে জড়িয়ে পড়ার আগে বহুবার ভাবতে হবে।

ছাত্র-ছাত্রীদের একটা লক্ষ্য নিয়ে পাঠে বেশী মনোনিবেশ হওয়া উচিৎ। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে নিজের জীবন নষ্ট করার মানসিকতা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারলে উচিৎ জবাব সে পেয়ে যাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102