কলমেঃ- দেবিকা রানী হালদার।
ইচ্ছের হয় অকাল মৃত্যু যেচে
মা-বাবা আত্মীয়ের কাছে,
পড়তে চাইলাম বাংলা অথবা ইংরেজি সাহিত্য
পড়তে হলো নিরস রসায়ন এ্যানাটমি অগত্যা!
মা-বাবা জ্যাঠা খুঁড়ো সবাই হলেন খুশি
আমি ইচ্ছের টুটি চেপে আজও নয়ন জলে ভাসি!
হলাম একজন পেশাজীবি, আয় রোজগার
ভালো
সাহিত্য ছাড়া মানব হৃদয়ে কে-বা জ্বালে আলো?
ইচ্ছে ছিলো হবো মস্ত সাহিত্যিক কবি
সহস্র মানুষের হৃদয়ে আঁকবে আমার ছবি
ইচ্ছে ছিলো সান বাধা ঘাটে বসে দেখবো রাজহাস সাতার
রাজহংসীর আদর সোহাগ ছন্দ বাধবো কবিতার,
আজ পেট কেটে বাচ্চা বের করা এক কসাই
নার্স স্টাফদের প্রয়োজন হলে শাসাই!
ইচ্ছে ছিলো সাহিত্য লিখবো যমুনার কূলে বসি
কেমনে জোছনায় ঢেউখেলানো জলেস্রোতে, ঝিলমিলি করে শশী?
দেখাবো মাঝিরা নিয়ে দাড় পাল্লা নদীর বুক চিরে যায় চলে
হঠাৎ দু’হাতে বন্ধ করবে চোখ, সখা মোর সেথা আসবে না বলে!
আজ আমি ডাক্তার আপা, ছুরিকাঁচি সার্জন
প্রসূতির পেটকাটি সূচ সূতা হাতের কাছে না পেলে দেই গর্জন!
কবি হয়ে দেখার ইচ্ছে ছিলো পরন্ত বিকেলে গম ক্ষেতের দোল
গ্রামে ঘুরবো, শুনবো আদুল গায়ের হামা গুড়ি দেয়া শিশুর আধো আধো বোল!
হলো না, মা-বাবা মাসি পিসি হতে দিলো না
আমার হৃদয় কি চায় সে মতামতটা নিলো না!
কত মিনতি, ম্যাথ পদার্থ বিদ্যা ভালো লাগে না
রসায়ন বাইওলজিতে আমার জীবন মেলে না!
নারী আমি, স্বাধীনতা কোথায়, গলাধঃকরণ করলাম নিউটনের সূত্র
মুখে মাস্ক পড়ে প্যাথোলজি নামে ঘাটলাম মানুষের মলমূত্র!
নরম হৃদয় টা হয়ে গেলো পাথরের মত কঠিন
ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তার না হলে পয়সা কোথায় আজকের দিন?