কলমে: ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
কালো চামড়ায় জন্ম দিলে কেন ভগবান
শ্বেত শুভ্র চামড়া দিলে হতো কি লোকসান?
করেছো তুমি বিশ্বে শুধু ধবল চামড়ার কদর
আধার কৃষ্ণ চামড়া নারীর কেউ করে না আদর
কৃষ্ণ বর্ণে জন্ম নেয়া নারীর অপবাদ
কালো টা, পুরুষ চোখে বড় অপরাধ!
বাবার বোঝা মায়ের কান্না ভাইয়ের বকাবকি
বাধি না কেশ, পরি না সুন্দর ভূষণ, নাই কোন সখি!
জোটে না বর, আইবুড়ো রই, বয়স বসে যায়
কালো বলে পাড়ার ছেলে কেউ ফিরে না চায়!
বয়স যখন তিরিশ কোঠায় জুটলো একটা বর
ভরি দশেক স্বর্ন দিয়ে জোটালো সংসার!
জমি জিরাত বেঁচে বাবা করলো মেয়ে পার
বলতে গেলে মেয়ের জন্য কিনে আনলো বর!
শ্বশুর বাড়ী সকাল-বিকাল টিটকিরি শুধু জোটে
সবাই বলে এমন কালি, দশ ভরি সোনা মোটে?
কড়াইয়ের কালি এনে ননদী, গায়ে দিতো ফোটা
মিশে গেছে গায়ের সাথে, বলে দিতো খোঁটা!
রাত বারো টায় ফিরতো পতি, বাংলা মদ গিলে
তার বিছানায় আমায় দেখলে, কাঁপতো না-কি পিলে!
এমনি নিত্য অবহেলা কথায় হাতে মার
মনে হতো ছেড়ে যাই এ ভূয়া সংসার !
ছোট বোন টার বিয়ে হলো আমার যেতে মানা
এসব নিয়ে শুনতাম খোঁটা দিনে-রাতে হানা !
এ বিশ্বে কোথাও ঈশ্বর কালো’র জায়গা নাই
সবাই মুক্তি পাবে যদি দুনিয়া ছেড়ে যাই!
রাত বারোটায় নিত্য খসম, ফিরে নিজ ঘর
কালো বউ ঘরে বলে, নিজ বাড়ী তার পর!
কতজনের সুখশান্তি করছি সর্বনাশ
ফ্যানের সাথে শাড়ী বেঁধে গলায় নিলাম ফাঁস!
মৃত্যুর পরে আত্মা আমার দেখে সব কিছু
শান্তি নাই মরেও আমার পুলিশ নিলো পিছু,
শাড়ী কেটে দারোগা সাব, নামালো লাশ নিচে
এমন কালো কেন শালি কপালে মারো পিছে!
মর্গে যখন গেলো লাশ ডোম ব্যাটা হাসে
উদাম করে হাতরায় লাশ হাসে আর কাশে!
সব অঙ্গ কালো শালির হলো নারে রুচি
কুমারী ছিলো শালি, বলে চালায় কাঁচি !
কুরআন পুরান গীতা বাইবেল কালো কালির লেখা
বিশ্বের তাবত বিদ্যাবুদ্ধি কালো কালিতে শেখা!
ভগবান “কালি” দারুন কালো ত্রিশূল তার হাতে
মেয়ে মানুষ কালো হলে নেয় না পুরুষ সাথে!
সৃষ্টির এত বৈষম্য তোমার, বুঝি নাতো আমি
কাউকে হাসাও, অচ্ছুৎ কেউ, তুমি জগত স্বামী !
পশ্চিমাদের চামড়া সাদা আফ্রিকার সব কালো
কেমন তুমি নিরপেক্ষ দাসের কাছে বলো!
বিশ্বের শক্তি সম্পদ দম্ভ, দিছো সাদার তরে
শ্যামল কালো এশিয়া আফ্রিকা, না খেয়ে সব মরে!