কলমে: জাসমিনা খাতুন
ছায়ার শহর একটি চির শান্তিময় শহর। শহরের মানুষ পূর্ণ মানবিকতায় বাস করত। প্রতিটি পরিবার দরজা-জানালা খোলা রেখে শান্তিতে ঘুমাতে পারত।
কিন্তু একদিন শহরের রাস্তায় ভুতুড়ে চিৎকার প্রতিধ্বনিত হতে থাকে।
মুখে একটি নবজাতক শিশু নিয়ে চারটি বুলডগ রাস্তায় শিশুটির মাকে খুঁজছিল।
লোকজন জড়ো হতে থাকে, চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অন্য জাগতিক শক্তি দ্বারা চালিত, চারটি বুলডগ শিশুর মায়ের সন্ধানে সারা শহর ঘুরে বেড়ায়। শহরের অন্য সব কুকুর অনুসন্ধানে যোগ দিয়েছে।
রাত নামার সাথে সাথে পুরো শহর তল্লাশি করা হয়। হঠাৎ বুলডগরা কোর্ট হাউসের সামনে এসে থামল। ভৌতিক শব্দে দরজা খুলে ওরা ঢুকল। বিচারককে তার নাম ধরে ডাকালো।
সিদ্দিকী সাহেব জরুরি শুনানিতে সভাপতিত্ব করেন। কুকুরগুলি তাদের পিছনের পায়ে দাঁড়িয়ে, সামনে শিশুটি রেখে বিচারকের মুখোমুখি।
অবাক হয়ে বিচারক ভীরু কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন, ওদের এখানে কে এনেছে?
নীল চোখের বুলডগ মানব কন্ঠে বলল, “আমরা সর্বোচ্চ খোঁজাখুঁজি করেছি। শিশুটির পরিবারকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু তার শরীরের গন্ধ আপনার সাথে মিলেছে। আমরা শিশুটির জন্য এসেছি, হয়তো আপনার কোনো রক্তের সম্পর্ক আছে।”
বিচারক খুবই সংশয়ে পড়লেন। দেয়ালে ঝোলানো রাইফেলটা কুকুরগুলোর দিকে নিশানা করলেন।
নীলাভ বুলডগের চোখ বেগুনি হতে লাগল। বিচারক নিজ হাতেই দরজা বন্ধ করে দিলেন।
একটা অদ্ভুত সবুজ আভা পুরো ঘরটাকে ঢেকে দিল। কুকুরগুলো দাঁত বের করে দিল।
“আপনি আমার কাছে কি করতে চান?” কাঁপা কাঁপা গলায় বিচারক জিজ্ঞেস করলেন।
বুলডগের কণ্ঠ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল, “মাকে খুঁজুন!”
সবুজ আভা তীব্র হওয়ার সাথে সাথে বুলডগগুলি ভয়ঙ্কর নীরবতায় শিশুটির সাথে অদৃশ্য হয়ে গেল।
পরদিন সকালে জজ সাহেবকে শহরের রাস্তায় ভীতসন্ত্রস্ত চোখে দেখা গেল। তার চোখে এক অদ্ভুত শীতলতা। সারা শহরে ছড়িয়ে পড়ল এক অদ্ভুত বার্তা।
বিচারকের নির্দেশে তল্লাশি চলতে থাকে। কিন্তু অধরা থেকে যায় শিশুটির পরিবার।
কেউ কেউ বলে যে চারটি বুলডগ এখনও শহরের রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় বাচ্চা টির মায়ের খোঁজে।
তাদের চোখে এক ভয়ানক তীব্রতা, এবং তারা এখন সন্তানের রক্ষক হিসাবে দায়িত্বে রয়েছে…।