মোঃ জাবেদুল ইসলাম,
রমনীগঞ্জ,বড়খাতাহাতীবান্ধা লালমনিরহাট।
ষোলই ডিসেম্বর বিজয় দিবস,
চারিদিকে সবাই ব্যস্ততম।
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে হবে,
তা-ই এতো ছুটাছুটি।
শহীদ মিনারে চারপাশে,
পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে সবাই ব্যস্ত।
কেউ ফুলের ডালা বানাতে ব্যস্ত,
কেউ ফুলের তোরা নিয়ে ব্যস্ত।
অনেক মানুষ অনেক মানুষ -
আরও বহু মানুষের ঢল সেখানে।
এরই মধ্যে এক বুড়ি মা
পরনে তার জীর্ন শির্ন সাদা ছেঁড়া শাড়ি
মাথার চুলগুলো পাকা আর,
এলোমেলো, রোগাক্রান্ত।
কি খুজঁছে কি চাই তার,
শুধায় না কেউ তাঁকে।
এ-তো মানুষের ভীড়ে,
তাহমিদকে চাই।
যুদ্ধে গিয়েছিল তাহমিদ,
আসেনিকো আর ফিরে।
তাহমিদ যুদ্ধে শহীদ হয়েছে,
দানবদের বুলেটের আঘাতে।
বুড়ি মা তা জানে না,
তাহমিদের বন্ধুরা তাহা জানে।
তারা বুড়ি মা কে কিছু বলে না,
বুড়ি মা'কে মানানো যাবে না।
তা' ই তারা নি: শ্চুপ হয়ে থাকে,
তাহমিদ তাঁর একমাত্র সন্তান।
ষোলই ডিসেম্বর বিজয় দিবস,
শহীদ মিনারে প্রান্তরে -
অনেক মানুষ আরও অনেক মানুষ,
বহু মানুষের ঢল সেখানে।
সবাই মিলে সুসজ্জিত ভাবে দাঁড়িয়ে,
ফুলের ডালা আর ফুলের তোরা নিয়ে-
উপস্থিত সেখানে।
শহীদের জানানো হবে এখন সবাই নিরব,
কেউ কোনো কথা বলছে না।
এতো মানুষের ভীড় ঠেলে ঠেলে,
বুড়ি মা চলে যায় শহীদ মিনারের কাছে।
বুড়ি মা ব'লে ওরে,
তোমরা তো সবাই এখানে -
আমার আদরের মানিক,
কলিজার টুকরো তাহমিদ কোথায়?
সে যে যুদ্ধে গেল চলে-
আর তো এলো না ফিরে?
তোমরা সবাই বলো আমাকে।
নি:শ্চুপ সবাই সেখানে আজ,
কারোর মুখে কোনো কথা নেই।
এতো মানুষ, বহু মানুষ, আরও বহু
মানুষের ঢল সেখানে -
বুড়ি মা কাঁদতে কাঁদতে,
মাটিতে নুয়ে পড়ে সেখানে।
তাহমিদের বন্ধু জাফর, ইকবাল, করিম
দৌড়ে এসে বুড়ি মা'কে জড়িয়ে ধরে,
বেদনার আপ্লূত কন্ঠে ব'লে,
কাঁদছো কেনোগো মুড়ি মা।
তাহমিদ নেই, কিন্তু লক্ষ কোটি তাহমিদ
দাঁড়িয়ে আছি তোমারি সামনে।
সে দিন তাহমিদ আর লক্ষ তাহমিদ,
প্রাণ দিয়েছিলো ব'লে।
বাঙালিরা মোরা সবাই বেচে গিয়েছি-
বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে
দাঁড়িয়ে আছি এখানে।
আজ ষোলই ডিসেম্বর বিজয় দিবস
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।
পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ,
তাঁর পড়েও বুড়ি মা বলে,
আমার তাহমিদ কোথায়?