কলমে:রোজিনা খাতুন
বুঝতে শেখার বয়স থেকে আমি খাঁচায় বন্দি।
সারাক্ষণ আমার কাজ খাঁচার মধ্যে ডানা ঝাঁপটানো।
মিষ্টি একটা পাখি প্রতিদিন খাঁচার বাইরে ছুটোছুটি করতো।
আর আমাকে বলতো তুমি কি মুক্তি চাও?
আমি বলতাম আচ্ছা মুক্তি কি?
পাখি বলতো মুক্তি হলো মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়া,ছুটে চলা দিক বিদিক,বৃষ্টিতে ভেজা।পাহাড় পর্বত নদী সবজায়গা বিচরণ।
আমি বললাম,
না আমি মুক্তি চায় না।
এখানে আমি খুব ভালো আছি।
পাখিটা খুব করে বোঝালো আমাকে।
তুমি যেভাবে বন্দি জীবনে বেঁচে আছো
তাকে বাঁচা বলে না।
ভালো থাকাও বলে না।
আমি তোমাকে মুক্ত পৃথিবী দেখাতে চাই।
এক পর্যায় জোর করে খাঁচার থেকে বের করলো আমাকে।
আমিতো অবাক,বাইরের জগৎ কত সুন্দর,
সবুজ গাছপালায় ঘেরা বন,নিল আকাশ,
মুক্ত বাতাস,বৃষ্টি,ফুল আমার মতো হাজারো রঙ বেরঙের পাখি।উড়ছি,ছুটছি, নদীতে ডুব দিচ্ছি।
একজন আরেক জনকে ঠোঁট দিয়ে খাইয়ে দিচ্ছি।
দুটি পাখি মিলে গাছের মগডালে বাসা বেঁধেছি।দিনের শেষে গোধূলি লগ্নে বাসায় ফিরছি।এভাবে চলে কিছু দিন।ঝড়ঝাপটার মধ্যেও পাখিটা ডানা দিয়ে আমাকে আগলে রাখে।
হঠাৎ করেই পাখিটা কোথায় যেন হারিয়ে গেলো।উড়ি আর খুজি মেঘের দেশে,বন বাদাড়ে,উড়তে উড়তে ক্লান্ত আমি,কোথাও তার খবর নেই।একদিন খবর পেলাম অতিথি পাখির সাথে জোড় বেঁধে চলে গেছে অচিন পুরে।
আমাকে মুক্তি দিয়ে গেলো ঠিকই কিন্তু বন্দি করে গেলো তার মায়ার ভূবণে।