স্টাফ রিপোর্টার:
শত বছর আগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর লেখনীতে বাংলাদেশ নাম প্রথম উচ্চারিত হয়। নমঃ নমঃ বাংলাদেশ মম , চির মনোরম চির মধুর...... কিংবা "দূর আরবের স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশের কুটির হতে" তিনি বলেছিলেন, "বাংলা বাঙালির হোক, বাংলার জয় হোক".... "মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহিয়ান"...."জাগো নারী জাগো বহ্নিশিখা'
"আমরা যদি না জাগি না, কেমনে সকাল হবে"
"ঐ নতুনের কেতন ওড়ে কালবৈশাখী ঝড়, তোরা সব জয়ধ্বনি কর"
সকলের সমবেত উচ্চারণ ছিলো নজরুল এর চেতনা-দর্শনের, সাম্য-সম্প্রীতির কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ বিনির্মান করতে হবে। আর কোন বৈষম্য নয়, থাকতে পারবে না। ছাত্র জনতার আন্দোলন এর সুফল "গণতন্ত্র ও সুশাসন শাসন নিশ্চিত করতে হবে"।
দেশ হতে দুর্নীতি ও সকল বৈষম্যের মূল উৎপাটনের শপথ নিতে হবে। উদ্বোধনী বক্তব্যে উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের সমন্বয়ক মোঃ আসাদুজ্জামান এ কথা বলেন।
৫ দিনব্যাপী নজরুল উৎসব এর তৃতীয় দিন ২৯ আগস্ট ২০২৪ খৃষ্টাব্দ নজরুল বিষয়ক সমৃদ্ধ ভাবনায় এক অসাধারণ আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। কানায় কানায় পূর্ণ ছিলো বেইলি রোড এর মহিলা সমিতি মঞ্চের নীলিমা ইব্রাহীম অডিটোরিয়াম- ঢাকা। "জাগো মাতা কন্যা বধূ জায়া ভগিনী " শীর্ষক আলোচনা সভায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও মুল আকর্ষন অগ্নিগিরি নাটক মঞ্চায়ন।
'নজরুলীয় চেতনায় উজ্জীবিত হোক কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ ' এই প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলছে বিদ্রোহী The Nazrul Centre ।
কবি ও পুথী সম্রাজ্ঞী, বাংলাদেশ ব্যাংক এর এডিশনাল ডিরেক্টর ও জাতীয় নারী সাহিত্য পরিষদ সভাপতি হাসিনা মমতাজ হাসি এর সভাপতিত্বে ও নজরুল উৎসব উদযাপন-২০২৪ ইং কমিটির সমন্বয়ক কবি ও কথাসাহিত্যিক নাসরিন ইসলাম শেলী এবং কবি ও বাচিক শিল্পী সুলতানা রাজিয়া এর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় প্রধান অতিথি দেশবরেণ্য আইনজ্ঞ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এর সাবেক বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজি, প্রধান আলোচক হিসাবে উপমহাদেশের খ্যাতিমান বরেণ্য নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ফেরদৌস আরা এবং উদ্বোধক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নজরুল উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও 'কাঙ্খিত বাংলাদেশ' এর সমন্বয়ক রাস্ট্র চিন্তক সাবেক কর কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান, মুল প্রসঙ্গ উপস্থাপনে ছিলেন বিদ্রোহী The Nazrul Centre এর চেয়ারম্যান, রাস্ট্র চিন্তক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক এর সাবেক নির্বাহী পরিচালক মাকসুদা বেগম, স্বনামধন্য কবি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা নাহিদা রোকসানা, সংস্কৃতজন মোঃ হারুনর রশীদ রাজা, বিশিষ্ট আবৃত্তিকার ও গণমাধ্যম ব্যাক্তিত্ব মাহবুব মুকুল, নাশিদ শিল্পী ও সুরকার ওস্তাদ গোলাম মাওলা, স্বনামধন্য ছড়াকার আতিক হেলাল, শিক্ষাবিদ ও নারী নেত্রী খুকু মনি, কবি মনিরুল ইসলাম , ওয়ান ফার্মার সিনিয়র কর্মকর্তা জনাব হাসমত আলী, সংস্কৃতি জন ও উপস্থাপক কবি টিমুনি খান রিনো, মিসেস রুবিনা খান, নাট্যকার ও অভিনেতা এইচ এন বাদল, অভিনেত্রী ও সংগঠক রাস্না হিমেল প্রমূখ।
নজরুল সম্মাননায় ভূষিত বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী মাহবুব মুকুল এর দরাজ কন্ঠে নজরুলের কালজয়ী কবিতা এক আল্লাহ জিন্দাবাদ এর আবৃত্তি ও ওস্তাদ গোলাম মাওলার কন্ঠে নজরুলের গজল, ও কবি হাসিনা মমতাজ হাসি এর পুথিপাঠ মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ করেন দর্শক শ্রোতা।
দেশবরেণ্য নজরুল সংগীত শিল্পী ফেরদৌস আরার যাদুকরী কন্ঠে নজরুল সংগীত সকলের হৃদয় ছুয়ে যায়।
জাতীয় নারী সাহিত্য পরিষদ এর প্রতিপাদ্য বিষয় "জাগো মাতা কন্যা বধূ জায়া ভগিনী" গান টি পরিবেশন করেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ উপস্থিত জাতীয় নারী সাহিত্য পরিষদ এর সদস্যবৃন্দ। নজরুল ইসলাম এর কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্যে ছিলেন সুপ্তত্থিতা একাডেমী ও সৃষ্টিশীল একাডেমীর শিল্পীবৃন্দ সহ জাতীয় নারী সাহিত্য পরিষদ এর সম্মানিত সদস্যবৃন্দ। নজরুল ইসলাম কালজয়ী গান 'কারার ঐ লৌহ কপাট' পরিবেশন করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন এর সদস্যবৃন্দ , সেই সাথে নজরুল ইসলামের গজল পরিবেশনা অনুষ্ঠানে নতুনমাত্রা যোগ করে। নজরুল উৎসব উদযাপন কমিটির পক্ষে দেশবরেন্য নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ফেরদৌস আরা কে আজীবন সম্মাননা ও মোঃ আাসাদুজ্জামানকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে ১১ জন বিশিষ্ট অতিথী কে উত্তরীয় প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়।
আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে দ্বিতীয় পর্বে কবি কাজী নজরুল ইসলামের গল্প অবলম্বনে রচিত দেশ নাট্য দলের পরিবেশনায় "অগ্নিগিরি" নাটক মঞ্চায়ন করা হয়। নাটকটি নির্দেশনা প্রদান করেন বরেণ্য অভিনেতা এন এইচ বাদল ও নাট্যরুপ প্রদান করেন অভিনেত্রী রাস্না হিমেল। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৮ তম মহাপ্রয়াণ দিবস উদযাপন উপলক্ষে ৫ দিনব্যাপী নজরুল উৎসব এর গত তিনদিন ব্যাপী ২৭, ২৮ ও ২৯ আগস্ট ২০২৪ সকলের দাবী অনুরোধ একটাই অতিসত্বর বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম কে বাংলাদেশ এর জাতীয় কবি হিসেবে গেজেট প্রকাশ করার মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করা হোক।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্ঠা, জাগরণের কবি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে ঢাকার মনোরম হাতিরঝিলে নির্মিত মঞ্চকে নজরুল এর নামে নাম করন করা হোক।
পরিশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, বিদ্রোহী The Nazrul Centre এর নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ডক্টর শহীদ মনজু। বিদ্রোহী The Nazrul centre ও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ এর আয়োজনে ৫ দিনব্যসপী নজরুল উৎসবের সহ আয়োজক বাংলাদেশ সাপোর্টারস ফোরাম৷ আমাদের ভাবনা এসোসিয়েশন, জাতীয় নারী সাহিত্য পরিষদের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করার মধ্যে দিয়ে শেষ হয়ে যায় তৃতীয় দিনের নজরুল উৎসব।