আল্লাহ মুসলমানদের জন্য রোজা ফরজ করেছিলেন তাকে অনুভব করতে অভুক্ত মানুষদের কষ্ট! উপোস থাকলে আর সে উপোস যদি ভাতের অভাবে হয় তা হলে সে লোকগুলো এ দুনিয়ায় কত কষ্টে থাকে তা মনে জায়গা দিতে নিজে না খেয়ে থেকে সহানুভূতি অর্জন করার জন্য রোজা! এই অনুভূতি আপনাকে সম্পদের যাকাত দিতে অনুপ্রেরণা জোগাবে, মনে অনুভূতি আসবে, "আহ আমার ভাই না খেয়ে কত কষ্ট পাচ্ছে?" এজন্য যারা সেহরির না খেয়ে রোজা থাকছে তাদের খোঁজ নিবেন, যারা শুধু পানি খেয়ে ইফতার করছে বা একমুঠ মুড়ি, তাদের সাথে নিয়ে ইফতার করবেন!
প্রিয় পাঠক, আমরা কি তা করি? আমরা কি বাজারে যেয়ে দুটো ব্যাগ ভরে বাজার করে প্রতিবেশী অপেক্ষাকৃত
দরিদ্র কারো বাসায় পাঠায় দেই। হোটেলের খেতে গেলে দুটো ইফতারের বিল গোপনে দেই, যদি কাউকে গরীব পায় তাকে ঐ ইফতার প্লেট টা দিয়ে দেয়ার জন্য। অথচ সুইজারল্যান্ড, জাপান সহ ভুরিভুরি খৃষ্টান দেশের খৃষ্টানরা এ কাজ টা করেন।
ঢাকায় সব হোটেলে ইফতার করা যায় বিভিন্ন আইটেম থাকে, ৭০০/৮০০ আবার ৩০০/৪০০ টাকার ইফতার! আমরা অনেকে পরিবার নিয়ে বাইরে ইফতার করি, এটা ফ্যাশান, ঐতিহ্য, বড়লোকদের কালচার কিন্তু দুটো বিল দেই না, বা বলি না একজন গরীবকে একটা ইফতার করায় দিবেন আমি পেমেন্ট করলাম। হোটেলের বাইরে কত গরীব ইফতারের জন্য আহাজারি করে! গ্রামে ও কয়জন ৫ জন গরীব ডেকে আনে রোজ ইফতারে বরং রাজনৈতিক ইফতার পার্টি আমরা দেই, নাম সুনাম কুড়াই, ভোট কিনি
সেখানে গরীব প্রবেশ নিষধ!
আতর গোলাপ দিয়া শরীরে খুজবু ছড়ায়ে তারাবি পড়ি ফিরে এসে যে খাটে শুই তা কোন কন্ট্রাকটার ৫ লাখ টাকা দিয়ে কিনে দিয়েছিলো, বিল্ডিং যেটায় বসবাস করছি তা ঘুষের টাকায় তৈরি, নামাজ যে রুমে পড়ছি তা ঘুষ বা কারো উপর জুলুমের পয়সায় তৈরি, মোজাইক পাথর বা মার্বেল পাথর বসায় ইন্টেরিয়ার ডিজাইন করেছি অবৈধ টাকায়, মাদ্রাসা চালাচ্ছি তার মধ্যে ও ব্যবসা! এটা একটা ছটকার বাক্স, দেশ বিদেশ থেকে মাদ্রাসায় সাহায্য আসছে আর আমি নিজের বাস করা বিল্ডিং সেই টাকায় চার তলা করে তুলছি আস্তে আস্তে। আমরা পাপে কামাচ্ছি ভুল জায়গায় দান করে বেহেশতে কিনছি! কুরআনে আল্লাহ দান করতে বলেছেন, ইয়াতিম মিসকিন অভুক্ত গরীব গৃহহীন বিবাহ উপযুক্ত মেয়ে পয়সার অভাবে বিবাহ দিতে পারছেন না, মুসাফির ইত্যাদি কে। আমরা প্রবাসীরা বিদেশে কামাই করে মাদ্রাসায় ঢেলে বেহেশতে কিনছি আলজিরিয়ার্স মত সাড়ে দশ হাজার কোটি টাকার মসজিদ করছি ছাদে হেলিপোর্ট বানায় সেখানে দান করছি কিন্তু পাশেই আফ্রিকার বুরুন্ড যে দেশ বিশ্বের সবচেয়ে গরীব দেশ যার মানুষ এক বেলা পেট ভরে খেতে পায় না, তাকে সাহায্য করছি না!
রমজানে বিশ্বে সব চেয়ে খাদ্য অপচয় করে সৌদি আরব যার তৈরি খাদ্যের ৬০% ফেলানো যায়। কম খাদ্য অপচয় ভারত (Ref. বিশ্ব ফুড জরিপ সংস্থা।)
সিয়ামের পুরস্কার আল্লাহ নিজ হাতে দিবেন।
সারা মাস রোজা থাকলেন আর লোক দেখানো এলাকার চেয়ারম্যান কে ডেকে লোক জড়ো করে একলাখ টাকা মসজিদ কনস্ট্রাকশনে দিলেন এই পবিত্র রমজানে!
আপনার পয়সা জলে গেলো, সিয়াম তো হলো ই না!
এটা এখন ইসলামি স্টাইলে পরিনত হয়েছে!
ভালো থাকেন, উপোস নয় কুরআনের রোজা থাকেন, ওয়াদা পালন করেন, উপকারীর উপকার স্বীকার করেন, মিথ্যা বর্জন করেন, আল্লাহ কে ভয় করেন, তার বান্দার সরিষা পরিমান অন্যায় থেকে বিরত থাকেন, মানুষের দীর্ঘশ্বাস থেকে বাচুন! নারীকে সন্মান করেন, জ্ঞানী কে সন্মান করেন, নিজের ষড়রিপু এই রমজানে কন্ট্রোল করেন। প্রতিবেশীর খোঁজ নেন, অহমিকা ত্যাগ করেন তারপর সিয়াম পালন করেন, উপোস তো কুত্তায় ও থাকে!