লেখক: সিমা আক্তার।
জাতীয় সঙ্গীত হলো কোন রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত কোন গান যা দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। জাতীয় সঙ্গীতে রাষ্ট্র কর্তৃক একটা সুর নির্ধারন করে দেওয়া হয় , সে সুর ব্যতীত অন্য কোন সুরে সে দেশের নাগরিকরা জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পারবে না।
'আমার সোনার বাংলা' গানটি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে ১৩ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে নির্বাচন করা হয়। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪ অনুযায়ী , বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত 'আমার সোনার বাংলার' প্রথম ১০ লাইন।
এ গানটি মোট ২৫ লাইন। ১৯৭১ সালে ২৩ শেষ মার্চ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আনুষ্ঠানিক প্যারেডে এই গানটি গাওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ গানটি বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্র থেকে পরিবেশিত হতো।
এ গানটিতে প্রথমে স্পষ্ট করে দরদ দিয়ে বলা হয়েছে,
আমার সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালোবাসি।
এরপর চিরদিন বাংলায় অস্তিত্ব, বাঁশির সুরের প্রানের মধ্যৈ স্পন্দের কথা বলা হয়েছে।ফাল্গুনের আমের বনের ঘ্রান, অগ্রহায়ণের ভরা মাঠে মুগ্ধতা প্রকাশ পেয়েছে।সেই সাথে নদীমাতৃক বাংলাদেশের সৌন্দর্য বর্ননা করা হয়েছে। মায়ের মুখের মধুর ভাষা যার জন্য আমরা ১৯৫২ সালে প্রান দিয়েছি। এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে একটা দিনকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছি। এই গানে আবেগের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটে শেষের দিকে যখন বলা হয় , মায়ের মুখের বদন বা রুপ মলিন হলে আমরা কষ্টে ব্যাথা অনুভব করি । যার জন্য আমরা দেশের হয়ে লড়ি। যেমন লড়েছি ১৯৭১ এ স্বাধীনতার জন্য ।এবং ২০২৪ এ ছাত্র আন্দোলনে যা ধ্বংসাত্মক অবস্থা থেকে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটায়।
'আমার সোনার বাংলা ' গানটি এদের ভৌগলিক রূপ, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে।
যদিও এই গানটিতে দেশপ্রেম, মমত্ববোধ প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু জাতি হিসাবে আমরা যে বীরের জাতি,লড়তে জানি এধরনের কোন আন্দোলনের কথা বলা হয়নাই।১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন,১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, ২০২৪ এর ছাত্র আন্দোলন এই গানটিতে উল্লেখ করা নাই।
ড. মোহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা,যিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি জনপ্রিয় ও বিচক্ষণ ব্যক্তি। যদি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করতে হয় তবে , ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে সময় দিন দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যাওয়া ও নিজের সবটুকু দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। এবং ছাত্র জনতার নিকট প্রশ্ন রাখুন জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করতে হবে কি না ? এবং সেই সাথে বাংলাদেশের জনগনের সম্মতি থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছে ছাত্রজনতা অধিকার আদায়, মেধাবীদের দেশ ত্যাগ হ্রাস ও দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল অবস্থায় আনার জন্য অকাতরে প্রান দিয়েছে।তাদের ত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।