—————————-
লেখক:- ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
একজন অপরিনামদর্শী দুর্নীতি প্রশ্রয় দানকারী ঢিলেঢালা প্রশাসনিক মানসিকতার নির্বোধ শাসক ৫ ই আগষ্ট দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের কিছু মানুষ ভাবতে থাকলো, ডঃ ইউনূসে সরকার ৮ ই আগষ্ট শপথ নিয়েছেন আমরা আগের থেকে উন্নত জীবনে উঠে আসবো, ভয়ভীতি ঘুষ দুর্নীতি মুক্ত,ভূমিদস্যুতা থেকে মুক্তি পাবো, থাকবে না শালিসি বানিজ্য, নিয়োগ বানিজ্য, বন্ধ হবে চাঁদা দেয়া, মন্দির ভাঙা, চুরি ডাকাতি, ভারত প্রীতি, ভারতের দন্ত নখর ভেঙে দিতে যখন তার সহযোগী উপদেষ্টারা মানচিত্র না দেখে ইতিহাস ভুগোল না বুঝে সেভেন সিস্টার্স দখল, চিকেন নেক হুমকি ইত্যাদি বলা শুরু করলেন তখন আমরা যারা সামান্যই বোদ্ধা মানুষ ভীত হলাম, এরা কারা
এত খালি ঘটে দেশ চালাবে কিভাবে?
শুরু হলো লুটপাট ডাকাতি আনসার বিদ্রোহ ঠেকাতে ছাত্র ডাকা ডিসি নিয়োগ ওসি নিয়োগে ছাত্র সমন্বয়করা সচিবালয়! মনে পড়লো মুজিব কে হত্যার পর ফারুক রশীদ ডালিম গংরা আর সেনানিবাসে ফেরৎ গেলেন না, তারা খন্দকার মোশতাকের টেবিলে উঠে বসলেন পা ঝুলিয়ে! সেনাবাহিনীর চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনতে মেজর খালেদ ও সেনা প্রধান মেজর জিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হলো, মোশতাক ৮১ দিনে ৮২ সংস্করণ করে ফেললেন হোক তা ‘৭২ এর সংবিধান বিরোধী!
প্রিয় পাঠক, এ সরকার আজ ৫০ দিনে ক্ষমতায়, নতুন ডঃ ইউনূসের সরকার কোন একটা নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারেন নাই! বরং নিজেই সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিনের অনুষ্ঠানে স্ববীকার করলেন কিছুই করতে পারি নাই, পুলিশের কাছে যেয়ে সাহায্য পেলাম না! নিজেকে রক্ষা করতে পারছি কই?
একই ভাবে একই সাংবাদিকের অনুষ্ঠানে “আসিফ নজরুল” সাহেব বললেন,”২৬ লক্ষ ভারতীয় বাংলাদেশে চাকরি করে আর বাংলাদেশের লোক চাকরি না পেয়ে পথে পথে ঘোরে একথা আমি কিন্তু উপদেষ্টা হওয়ার পরে বলি নাই! অর্থাৎ ক্ষমতায় আসার আগে মিথ্যা গুজবে পাপ নাই, কৈফিয়ত নাই!
আর একজন উপদেষ্টা বললেন, “দেখতে থাকেন, দেশ আমাদের ও হাতে না, ছাত্রদের ও হাতে না, দেশের ও হাতে না! ” মানে তাহারা রিমোট নিয়ন্ত্রিত!
আর একজন উপদেষ্টা বিদেশি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে যেয়ে
টয়লেট করার অবস্থা অর্থাৎ বিদেশি রা কি বলে তা তিনি বোঝেন না, তিনি ইংরেজির ই ও জানেন না!
আর একজন উপদেষ্টা বললেন, আমরা কখন ও দেশের কথা ভাবি নাই, এখন ও ভাবছি না, আগামী তে ও ভাববো না!
মজার কথা হলো, দলীয় সরকারের মত এ সরকার ও মিথ্যা বলেন, ধর্মীয় ধোকা দেন,
লাফ দেন বাঘের মত পরে পরিবর্তন করেন নির্লজ্জের মত! ধরুন ভারতে ইলিশ রপ্তানি আমরা চাই না, তারা ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করলেন, মাত্র কয়েকদিনের ভিতর গত কয়েক বছর যত ইলিশ রপ্তানি করেছে তাদের ভাষায় স্বৈরাচার তা একবারে রপ্তানি করে দিলেন,
একজন মহিলা উপদেষ্টা বললেন, আমরা কিন্তু উপহার হিসাবে দেই নাই বৈদেশিক মুদ্রা আসছে এটা ছোট করে ভাববেন না! আসিফ নজরুল সাহেব ইলিশ রপ্তানি প্রশ্নে সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিন কে বললেন, আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে সহায়তা সমর্থন করায় তাকে কিছু ইলিশ দিয়েছি আগের সরকারের মত নতজানু হয়ে না বন্ধুত্ব হিসাবে! আমার এটা শুনতে শুনতে মনে হলো “সীতার” মত, হে বসুধা তুমি দু’ভাগ হও আমি তোমার ভিতর ঢুকে যাই! ইহা রাও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র পড়ান!
বিদ্যুৎ লোডশেডিং নিয়ে বলেছেন, হবে না একটা বিল্ডিং এ ১৬ টা এসি, মনে হলো এতদিন এসি কোন বিল্ডিং এ ছিলো না!
১. ৫ ই আগষ্ট সমর্থনে ইলিশ বখশিশ আর ১৯৭১ সালে ইন্দ্রাগান্ধী সেভেন ফ্লিট ৭৬০ খান যুদ্ধ জাহাজ আটকাতে তার মাত্র ১২০ খান যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে ভারত মহাসাগর অবরোধ করেছিলেন বিশ্বযুদ্ধের ঝুকি নিয়ে চীন মার্কিন কে রুখে দিতে তাতে বাংলাদেশের কৃতজ্ঞতা তা কে তিনি নতজানু পররাষ্ট্র নীতি দেখেন! ১ কোটি শরনার্থী আশ্রয় কোন বিষয় ই না! ট্রেনিং অস্ত্র গোলাবারুদ দিয়ে মুক্তি যোদ্ধাদের সাহায্য সেটা অন্যায় ছিলো!
২. তিনি এতটুকু জানেন না কোন দেশের অঙ্গ রাজ্য কোন পররাষ্ট্র নীতি পরিচালনা করতে পারেন না কেন্দ্র ছাড়া!
মমতাকে মাছ দিলাম নরেন্দ্র মোদিকে দিলাম না! কেন্দ্র ছাড়া রাজা কোন আমদানি রপ্তানি বিদেশ নীতি পরিবর্তন করতে পারে?
৩. মহিলা উপদেষ্টা বললেন, উপহার নয় রপ্তানি বৈদেশিক মুদ্রা আসবে এটা খাটো করে দেখার সুযোগ নাই! তার অর্থ গত সরকার প্রতি বছর রপ্তানি চুক্তি ডিঙিয়ে উপহার দিতেন! ইহারা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন, বাঙালি কে গরু-ছাগল ভেড়া ভাবা শুরু করেছেন?
ডঃ ইউনূসের সরকার কে ডুবাতে এমন একজন উপদেষ্টা ই যথেষ্ট।
৪. ডঃ ইউনূস বরং খোলামেলা সততার সাথে বলেছেন,” পুলিশ সাহায্য চেয়ে ব্যর্থ হয়েছি”! নিজেকে রক্ষা করতে পারছি কই?
প্রিয় পাঠক, আমরা জানি ছাগলের পাড়ায় ধান মাড়াই হয় না। অনুরোধ করবো দেশটাকে আর জাহান্নামে না নিয়ে নির্বাচন দিয়ে যাদের গ্রাম পর্যন্ত সংগঠন আছে তাদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে চলে যান!
অথবা —-
সব রপ্তানি খাতে কাজ করার আইন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনুন, গার্মেন্টস সেক্টর বন্ধ থাকায় ভিয়েতনাম ভারত চীন সেগুলো রীতিমতো দখল করে ফেলেছে। এসব মার্কেট সৃষ্টি করতে স্বৈরশাসকের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে!
খ) বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চালু করে দ্রুত লোড শেভিং বন্ধ করুন।
গ) গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করুন।
ঘ) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদনে দিতে রাশিয়ার সাথে কথা বলুন!
ঙ) নাগরিক মনে ভীতি সহনীয় পর্যায়ে আনুন!
চ) সস্তা ধর্মীয় ধোকা বন্ধ করুন। মসজিদ মাদ্রাসা মন্দির বিদ্যুৎ বিল নিবেন না বলে ঘোষণা করার পর ও বিল আসতেছে সব উপাসনালয়!
ছ) কোন দেশ কে হুমকি ধামকি দেয়ার আগে আপনার উপদেষ্টাদের ঐ দেশের ইতিহাস ভুগোল গ্লোবাল পলিটিক্স তার অবস্থান এবং নিজেদের ঘরে কয়দিনের চাল আছে তা ওজন করে লম্ফঝম্প দিতে বলবেন, বেইজ্জতি দেশটাকে করবেন না বিশ্বে এদেশের মাথা যথেষ্ট উচ্চতায়!
জ) বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করুন।
ঝ) চাঁদাবাজি বন্ধ করুন।
ঞ) মানুষের জীবনের নিরাপত্তা আনুন।
ট) কারো পূজা কারো চিবর দিবস বন্ধ করার মত মিছিল কঠোর হস্তে দমন করুন বিশ্বে বদনাম হচ্ছে!
ঠ) শেখ হাসিনা হোক শেষ পলায়ন করা শাসক আর কারো তেমন হেলিকপ্টার খোঁজা না লাগুক কামনা করি!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন! মানুষকে বোকা ভাবা বোকামি
ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেয়া আর-ও বড় বোকামি!