রতন ঘোষ, কটিয়াদী প্রতিনিধি:
ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। এই দেশে একেক ঋতুতে একেক রকম খাবারের ধুম পড়ে গ্রামগঞ্জের মানুষের। তা আবার প্রাচীনকাল থেকেই। এখন বাংলা বছরের আশ্বিন মাস, শরৎকাল চলছে। এ সময় তালগাছ থেকে ধপধপ করে পাকা তাল পড়ছে। প্রাচীনকাল থেকে ভাদ্র আশ্বিন মাসে পাকা তাল দিয়ে পিঠা, বড়া, পায়েস সহ নানা রকমের খাবার তৈরি করা করা হয়। প্রাচীনকালের এই তেরা উৎসব এখনো ধরে রেখেছে গ্রামগঞ্জের নর-নারীরা। যাদের তালগাছ রয়েছে তারা ঘুম থেকে জেগে ভোরেই তালগাছ তলা থেকে তাল কুড়িয়ে নিয়ে আসে। আর যাদের তালগাছ নেই তারা হাট-বাজার থেকে তাল কিনে এনে সহজ পক্রিয়ায় তাল চিপে রস বের করে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে গুড়, চিনি, দুধ ও গরম মশলা দিয়ে পাতিলে তুলে জ্বাল করে নেয়। এরপর সুস্বাদু তাল পিঠা, বড়া ও পায়েসসহ নানা রকমের খাবার তৈরি করা হয়ে থাকে। তালের ২টি জাত রয়েছে। তা হচ্ছে মহিষা তাল ও দুধা তাল। মহিষা তাল দেখতে কালো আকারে বড় আর দুধা তাল দেখতে লালটে আকারে একটু ছোট।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী সদরের বাজারে তাল বিক্রেতা মাইদুল ইসলাম জানান, আমি প্রতিদিন গ্রাম থেকে তাল কুড়ে এনে হাট-বাজারে বিক্রি করি। এতে কিছু টাকা আয় হয়। গাছপাকা ছোট তাল ৪০ টাকা, মাঝারি তাল ৬০ টাকা ও বড় তাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছি। আর হয়তো কয়েকদিন হাট-বাজারে তাল বিক্রি করতে পারবো। এরপর তালের সিজন শেষ হয়ে যাবে।
উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম জানান, আমার এক আত্মীয় বাসায় কয়েকটি তাল দিয়ে গিয়েছিল। সেইসব তালের রস দিয়ে পিঠা ও বড়া তৈরি করে খেয়েছি। বোয়ালিয়া গ্রামের জাহানারা জানান, প্রতিবছর আমি তাল দিয়ে পিঠা ও বড়া তৈরি করে খাই।গ্রামগঞ্জের মানুষের কাছে তাল খুব প্রিয় খাবার। তাই এখন গ্রামগঞ্জে তাল পিঠা, বড়া ও নানা রকম খাবার তৈরি করে খাওয়ার ধুম পড়েছে। কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কম্প্লেক্স মেডিকেল অফিসার ঈশা খান বলেন, তালে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস আছে যা দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়তা করে। এন্টিঅক্সিডেন্ট গুণসমৃদ্ধ হওয়ায় তাল ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম। এ ছাড়া স্বাস্থ্য রক্ষায় ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও তাল বেশ উপকারী । তালে আছে ভিটামিন-বি, তাই ভিটামিন-বি এর অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধে তাল ভূমিকা