কলমে: মুহাম্মদ মুহিউদ্দীন ইবনে মোস্তাফিজ।
শখ মানুষের জীবনের সাথে অতিভূতভাবে জড়িত। তাই তো মানুষ বলে শখের তোলা ৮০ টাকা। মানুষ তার জীবনে যতটুকু শখের আশা করে ততটুকু শখ তার জীবনে পূরণ হয় না। শখ করতে কি কোন বাধা আছে। শখ মানুষকে সুখ দেয় শখ মানুষকে শান্তি দেয়। এ শখ পূরণ করতে মানুষ অপরাধের পথে পা বাড়ায়। শখ পূরণ করতে কেউ নিচ্ছে ঘুষ কেউ খাচ্ছে সব। যেভাবেই হোক শখ পূরণ করতে হবে। অপরাধ করে হোক বা ভালো পথে হোক শখ পূরণ করতে হবে। মানুষের শখের তোলা ৮০ টাকা। মধুপুর গ্রামের সেলিম মিয়া অনেক দিনের শখ। মোটরসাইকেল কিনবে। সেলিম মিয়ার তো তেমন কোন অর্থ সম্পদ নেই কিভাবে সে মোটরসাইকেল কিনবে। শখ তো করেছে কিনতে তো হবে। কিভাবে কিনবে? সেলিম মিয়া চিন্তায় বিভোর। কি করা যায়। কোথায় অর্থ পাব? চিন্তা করতে করতে শেষমেষ ভেবে পেল চুরি করে হলেও মোটরসাইকেলের অর্থ জোগাড় করতে হবে। যে চিন্তা সেই কাজ। রাতের আঁধারে গ্রামের বিত্তশালীদের ঘরে চুরির জন্য হানা দিল। এভাবে কিছুদিন করতে লাগলো। কিন্তু মোটরসাইকেলের অর্থ তার জোগাড় হয়নি। সে তো ভাবনায় পড়ে গেল। এত কষ্ট করলাম তবুও অর্থ জোগাড় হলো না। এদিকে গ্রামবাসীরা তো অবাক! ইদানিং আমাদের মধুপুর গ্রামে চুরি বেড়েছে বেশ। গ্রামের বড় বড় মুরুব্বিরা মিলে সিদ্ধান্ত নিল রাতে পুরো গ্রাম পাহারা দেওয়া হবে। চোর ধরতে পারলে গাছের সাথে বেঁধে বেদম মায়ের দিতে হবে। গ্রামে তো পাহারা বসালো। এদিকে তো সেলিম মিয়ার অবস্থা খুব খারাপ। গ্রামে তো এখন পাহারা বাসায় গেছে এখন কিভাবে চুরি করব। না আমাকে চুরি করতেই হবে। মোটরসাইকেল যখন কিনব কষ্টতে একটু করতেই হয়। সে রাতেও চুরি করতে গেল। ভাগ্যিস পাহারা ধারদের হাতে ধরা পড়েনি। সে রাতের মজা বেঁচে গেল। তারপরের দিন রাতে আবার। এবারও কপাল গুনে বেঁচে গেল। এভাবে আর কয়দিন। ধরা তো তাকে পড়তেই হবে। তৃতীয় দিন যখন গ্রামের বড় বাড়িতে চুরি করতে গেল সেদিন পাহারাদের হাতে ধরা পরল সেলিম। এবার আর রক্ষে নেই। সে রাতে তো বেদম মাইর দিয়েছে পাহারাদাররা। সকালবেলা গ্রামের মুরুব্বিরা মিয়ার বিচার বসালো। মুরব্বিরা সকলে মিলে সেলিম মিয়াকে জিজ্ঞাসা করল, তুমি তো ভালো মানুষ। তুমি কেন চুরির মত জঘন্য পেশায় যুক্ত হলে। সেলিম মিয়া বলল, আমার অনেক শখ ছিল মোটরসাইকেল কিনব। কথায় আছে না শখ থাকলে সাধ্য নেই। আমার অবস্থায় তেমন। তাই গ্রামে ঘুরে ঘুরে প্রতি রাতে চুরি করে কিছু কিছু টাকা জমাচ্ছে। এই টাকা দিয়ে আমি মোটরসাইকেল কিনব। গ্রামের সকলে হাসিতে ফেটে বললেন। চুরি করে কিনবে মোটরসাইকেল। তাইতো লোকে বলে শখের তোলা ৮০ টাকা। চোরেও চুরি করে মোটরসাইকেল কিনতে চায়। আহারে চোরের শখ।