নরসিংদী প্রতিনিধি :-
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের চরমরজাল গ্রামে অন্যের সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে দখলের পর মিথ্যা মামলা দিয়ে জমির প্রকৃত মালিকদের হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে।
একই এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুল মজিদ মিয়ার তিন ছেলে লিটন মিয়া, মিজান মিয়া ও হুমায়ন মিয়ার বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখল করে তাদের ভিটাচ্যুত করার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আরসাদ মিয়া।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী আরসাদ আলী থানা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও পাচ্ছে না কোনো সুফল।
সরজমিন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঞ্চারাম বিশ্বাসের তিন ছেলে বানীকান্ত বিশ্বাস, গৌরাঙ্গ বিশ্বাস ও নিদানি বিশ্বাস মরজাল মৌজা সাবেক ৩১২ খতিয়ানে এস.এ ৩৩১৮ দাগে ১৭ শতাংশ এবং ৬৪৩ খতিয়ানে এস.এ ৩৩১৮ দাগে ১৫ শতাংশ দুই কোণে মোট ৩২ শতাংশ সম্পত্তির মালিক হোন। উক্ত ৩২ শতাংশ সম্পত্তি হতে ১৫ শতাংশ সম্পত্তি বাঞ্চারাম বিশ্বাসের তিন ছেলের কাছ থেকে আহম্মদ আলীর ছেলে জিন্নত আলী ক্রয় করে আর.এস ১২৩৬ খতিয়ানে ১৩৩৪৮ দাগে রেকর্ডমূলে মালিক হোন এবং বাকি ১৭ শতাংশ সম্পত্তি আব্দুল মান্নাফ মিয়ার নিকট সাব-কবলা বিক্রি করেন। মান্নাফ মিয়া মারা গেলে তার পাঁচ ছেলে যথাক্রমে ওসমান আলী, সাওকাত আলী, লেয়াকত আলী, আরসাদ মিয়া, ও সুরুজ মিয়া আর.এস ১৫৩৯ খতিয়ানে ১৩৩৪৮ দাগে রেকর্ডমূলে মালিক হোন। পরে জিন্নত আলী তার খরিদ করা ১৫ শতাংশ সম্পত্তি আব্দুল মজিদ মিয়ার নিকট বিক্রি করে দেন। মজিদ মিয়া মারা গেলে তার ছেলেরা আরসাদ আলী গংদের পৈতৃক সম্পত্তির উপর চোখ পড়ে। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। পরে ঔই সম্পত্তি মজিদ মিয়ার ছেলেরা পুরো দখলে নিয়ে গড়ে তুলেন ইমারত। এবিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামের মানুষ তাদের ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
আরসাদ আলী বলেন, এস. এ এবং আর.এস রেকর্ডে মালিক হয়েও আমরা আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত। মজিদ মিয়ার ছেলেরা এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু। তাদের রয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী। ন্যায্য দাবী করলেই তারা আমাদের ওপর আক্রমণ করে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার শালিস হলেও তারা আমলে নিচ্ছে না। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সানজিদা আক্তার উভয়কে ডেকে সমাধান করে দিলেও তা তারা আমলে না নিয়ে আমাদের পরিবার পরিজনের উপর একের পর এক মিথ্যা মামলা, অত্যাচার ও প্রাননাশের হুমকি দিয়ে আসছেন। বর্তমানে আমরা পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সত্তোর বয়সের এক বৃদ্ধ বলেন, সম্পত্তির প্রকৃত মালিক মন্নাফ মিয়া।আর মজিদ মিয়ার ছেলেরা জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল করে অবৈধভাবে ভোগ করে আসছে। এ নিয়ে গ্রামে বহুবার বৈঠক হয়েছে। কাগজে মালিক মন্নাফ মিয়া। সেই হিসেবে সকলে মন্নাফ মিয়ার ছেলেদের পক্ষে রায় দেয়। কিন্তু মজিদ মিয়ার ছেলেরা রায় না মেনে আরসাদ আলী ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করতাছে।
সাবেক চেয়ারম্যান সানজিদা বলেন, মন্নাফ মিয়া ও মজিদ মিয়া দুপক্ষের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে গ্রামে বহুবার দেন-দরবার হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। পরে আমি উভয় পক্ষ থেকে ডেকে কাগজপত্র দেখে একটা সুরাহা করে দিয়েছিলাম। মন্নাফ মিয়ার ছেলেরা মানলেও মজিদ মিয়ার ছেলেরা তা মানেননি।
অভিযোগের সত্যতা জানতে মজিদ মিয়ার বাড়িতে গেলে আগেই সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে মজিদ মিয়ার ছেলেরা সটকে পড়েন। পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ে বাড়ি। পরে আর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।