বিশেষ প্রতিনিধি:
এই রাষ্ট্রটা আপনার। সরকার রাষ্ট্রের দেখভালের দ্বায়িত্বে নিয়োজিত পরিবর্তনশীল একটি প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ সরকার আপনার রাষ্ট্রের পক্ষান্তরে আপনার প্রতিনিধি।
যেমনিভাবে আপনার নিজ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক আপনার প্রতিষ্ঠানের দেখভাল করেন তেমনি সরকার আপনার রাষ্ট্রের দেখভাল করেন। আপনার প্রতিনিধির গুনগান করে দিন পার করাটা আপনার দ্বায়িত্ব না, বরং আপনার প্রতিনিধিকে দিয়ে রাষ্ট্রের কাজ করিয়ে নেয়া আপনার দ্বায়িত্ব। আপনার প্রতিনিধি যেন বাঁধাহীনভাবে তার উপর অর্পিত কাজগুলো করতে পারে সেজন্য যথাযথ সহযোগীতা আপনি করবেন। সেইসঙ্গে সে তার দ্বায়িত্বে অবহেলা করছে কিনা সেটাও আপনি দেখবেন।
আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক কোথাও ব্যর্থ হলে আপনি যেমন তাকে ভৎসনা করে তাকে সতর্ক করেন, তেমনি আপনার রাষ্ট্রের প্রতিনিধি কোন ভুল করলে তাকেও অনুরুপ সতর্ক করুন। এটা মনে রাখতে হবে যে, আপনার রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আপনি আপনার প্রতিনিধিকে ভালবাসেন, আপনার প্রতিনিধিকে ভালবাসবার জন্য রাষ্ট্রের দ্বায়িত্ব দেননি।
আপনার অতিরিক্ত ভালবাসা ও প্রশ্রয় পেয়ে আপনার প্রতিনিধি যেন বেপরোয়া হয়ে না যায় সেটা আপনাকে দেখতে হবে। আর যদি দেখেন আপনার প্রতিনিধি আপনার রাষ্ট্রের জন্য নিবেদিত প্রান, তার প্রচেষ্টা আন্তরীক তাহলে আপনার রাষ্ট্রের প্রয়োজনেই সেই প্রতিনিধিকে প্রত্যক্ষ সযোগীতা করাটা আপনার সবচাইতে বড়ো স্বার্থ। ভুল-ভ্রান্তিগুলো ধরিয় নিশ্চয়ই দিবেন, কিন্তু তার যোগ্যতা ও আন্তরীকতাকে আপনি যে মুল্যায়ন করেন সেটিও তাকে বুঝতে দিন। প্রচেষ্টা থেকে আপনি কতটা ভালো ফল চান তা নির্ভর করে আপনি সেই প্রচেষ্টাকে কতটা উৎসাহিত করেন তার উপর।
জাতিসংঘে দেয়া ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বক্তব্যকে কেউ চমৎকার বলছেন, কেউ বলছেন ব্যক্তিগত ব্যবসার প্রচার বেশী ছিল। আমি তার বক্তব্য কেমন ছিল সেদিকে যাচ্ছিনা। আমার কাছে যেটা অসাধারন লেগেছে সেটা হচ্ছে তার বক্তব্যে উপস্থিত বিশ্ব নেতৃবৃন্দের যে প্রচন্ড আগ্রহ সেটি।
অনেক মানুষেরই নানামুখী প্রতিভা ও যোগ্যতা থাকে। কিন্তু নিজেকে গুরুত্বপুর্ন হিসাবে প্রমান করা এবং গুরুত্বপুর্ন মানুষদের কাছে নিজেকে তাদের জন্য গুরুত্বপুর্ন হিসাবে উপস্থাপন করতে পারাটা একটা ভিন্নরকম যোগ্যতা। এটা খুব সামান্য সংখ্যক লোকের মধ্যেই থাকে। ড. মুহাম্মদ ইউনুস সে বিচারে অনেকের মধ্যে অনন্য।
আমি খেয়াল করেছি, তিনি কি বলছেন তার চাইতেও সবার কাছে বেশী গুরুত্বপুর্ন হয়ে ওঠে কথাগুলো ‘কে বলছেন’। বিশ্ব দরবারে সবার মধ্যে এরকম একধরনের চিন্তা তিনি প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন যেখানে তিনি কি বলছেন সেটার বিশ্লেষনে না গিয়েও সবাই ধরে নেয় যেহেতু কথাগুলো ড. ইউনুস বলছেন সেহেতু কথাগুলো অবশ্যই গুরুত্বপুর্ন। এ এক অসাধারন যোগ্যতা।
The most empressive man of the world.
প্রতিহিংসার বাইরে এসে মন থেকে চাইলে তাকে দিয়ে নিশ্চয়ই সম্ভব।
সৈয়দ লিটু, সভাপ্রধান, গণ রাজনৈতিক জোট-‘গর্জো’