এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:
গ্রামীন জনপদের পিছিয়ে পড়া নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দেড় যুগ আগে চালু হওয়া বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে খুলনা বিভাগের একমাত্র মহিলা কৃষি প্রশিক্ষন ইনস্টিটিউট নানা সংকট পড়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। আবাসিক এ প্রতিষ্ঠানটির ২১টি পদের মধ্যে ১৪টি রাজস্ব পদ গত ১৬ বছর ধরে শূন্য রয়েছে।
২০০৪ সালে বাগেরহাট জেলা শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দুরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার তুলাতলা নামক স্থানে গড়ে তোলা হয় বিভাগীয় মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। ২০০৫ সালে কৃষি, পশু পালন, পল্ট্রি ও মৎস্য চাষ এই ৪টি ট্রেড নিয়ে প্রশিক্ষন কার্যক্রম শুরু হয়। এক বছরের মাথায় ২০০৬ সালের জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠানটির প্রশিক্ষন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্ধ থাকার ৬ বছর পর ২০১১ সাল থেকে নতুন চারটি ট্রেড কম্পিউটার, বিউটিফিকেশন, ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলরিং কার্যক্রম আবার শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। চালু থাকা ট্রেডগুলো প্রয়োজনীয় জনবল সংকট ও প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি না থাকায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
আবাসিক এ প্রতিষ্ঠানটির ২১টি পদের মধ্যে ১৪টি পদ গত ১৪ বছর ধরে শূন্য রয়েছে।১৪টি পদের মধ্যে প্রশিক্ষক, হোস্টেল সুপার, হিসাব রক্ষন কর্মকর্তার মত গুরুত্বপূর্ণ পদও রয়েছে। ৪টি ট্রেডে আটজন প্রশিক্ষকের মধ্যে একজনও নেই। প্রতিষ্ঠানটি চলছে অতিথি প্রশিক্ষক দিয়ে। কম্পিউটার ল্যাবে ১২টি মধ্যে ৫টিই নষ্ট। আর ৭টি জোড়াতালি দিয়ে কোনমতে চলছে।
প্রশিক্ষণার্থী বলছেন, প্রতিটি ট্রেডে প্রশিক্ষণের সময় মাত্র তিন মাস। নিজেদের আতœকর্মসংস্থানের জন্য আমরা এখানে এসেছি। একদিকে এই প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষক কম অন্যদিকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি কম থাকায় আমরা ঠিকমত হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিতে পারছি না। ফলে আমরা এই কম সময়ের মধ্যে পরিপূর্ণ শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তাই এখানে সকল ট্রেডে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি দিতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
ড. মোহাঃ মোখলেসুর রহমান, সহকারী পরিচালক প্রশিক্ষণ ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিভাগীয় মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বাগেরহাট। তিনি বলেন, জনবল ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদিও অভাবে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব সমস্যার সমাধান হলে পিছিয়ে পড়া দক্ষিণাঞ্চলের নারীদের আতœকর্মসংস্থানের সম্ভবনা সৃষ্টি হবে। তাই সরকার এই প্রতিষ্ঠানটির সংকট দূর করতে পদক্ষেপ নেবে বলে তিনি আশা করছেন।
প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরুর পর থেকে এপর্যন্ত ৪ হাজার ৫৭৪ জন নারী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এরা দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করছেন। পাশাপাশি নিজেই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।