এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ
আশিক চলতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মহলে পরিচিত লাভ করতে থাকে। মিডিয়াতেও টুকটাক কাজ করতে করতে পরিচিতি লাভ করে।
বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় শত শত চিঠি আসতে থাকে। তাদের মধ্যে অনেক জনই হৃদয় রাজ্যে আসন পেতে বসলেও হৃদয় সিংহাসনে কাউকে স্থির করেনি আশিক। বন্ধুত্বের মাঝে আশিকের জীবনের পরতে পরতে জরিয়ে রয়েছে রোমানা আক্তার রিতা,আঁখি আক্তার, মিথিলা, মাহবুবা আক্তার বাবলী, সহ আরো অনেকেই। নুশরাত শাহরীন প্রীতি, নাফিসা নাওয়াল তাহিয়াত ডায়না, এস আর নুপুর, এম এ সুরভী সহ অনেকেই!
পারিবারিক প্রস্তাবেও আশিকের জীবনে নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। অনেক কুমারী নারীর উন্মুক্ত প্রস্তাবে মনস্থির করতে ব্যর্থ হয়েছে বারংবার। আম্বিয়া, রঞ্জনা,লতা, মমতাজ পারভিন মুক্তি, রোখসানা, সোনালী ববিতা, নাজমুন্নাহার আকলিমা, আকলিমা জাহান আঁখি, চুমকি, শাপলা, ফারজানা, আম্বিয়া, সেলিনা আক্তার বর্ষা, শাকিলা পারভীন শায়লা-দেরকে প্রস্তাব দিয়েও প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফিরে
এসেছে বার বার।
আসমা উল হুসনা, নিশাত সুলতানা খানম, দুই জনের প্রতি আশিকের দূর্বলতা ছিলো প্রকট।
আসমা উল হুসনা বার বার রিকোয়েস্ট করে আশিকের প্রস্তাবকে বিরত রেখেছে বন্ধুত্বের প্রতি সম্মান দেখিয়ে। আশিকের প্রতি প্রচন্ড রকমের অনুভবে নিশাত সুলতানা পারিবারিক ছবি চেয়েছে তার পরিবারের সাথে কথা বলার জন্য। এখানে আশিক পুরোপুরি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়ে ছবি দিতে পারেনি। অসংখ্য কাব্য লিখে নিশাত সুলতানা খানমকে সমৃদ্ধ করেছে নিশাত সুলতানার চাওয়ার প্রতি গভীর সম্মান দেখিয়ে।
অনন্যা, কামনা, সুন্দরীদের প্রতি আশিকের প্রীতি আস্বস্ততা প্রেমের আকাশে অন্ধকার মেঘ জমিয়ে রেখেছিলো বলে আরাধ্য ভালোবাসার মানিষা খোন্দকার ফাতেমা, সালমা খাতুন, সেতু, বীথি, ঊর্মিদের কথা টলাতে পারেনি আশিকের লোভী মনকে।
আশিক ছুটেছে কেবল কামরুন্নাহার, মাহমুদা আক্তার চাঁদনী, জোবাঈদা শম্পা কিম্বা আফরিন আক্তার, সাবিনা ইয়াসমিনদের পিছনে। ফিরে দেখেও দেখার প্রয়োজন বোধ করেনি প্রতিবেশী গ্রামের কোমল মতি হৃদয়গ্রাহী আরিফা বা সাবিনাদের কথা। আশিকের প্রতি আরো অনেক জনেরই মহব্বতের নজর ছিলো। নীলাম্বরী নীরা,শাহজাদী কুসুম, তাদের চাওয়া-প্রত্যাশার নুন্যতম মুল্য টুকুও ছিলোনা আশিকের তপ্ত চিত্তে। আশিকের মায়ের পছন্দ কৃত মেয়ে শাপলা, সেলিনা আক্তার বর্ষা, সবশেষে শাহজাদী কুসুম-কে পছন্দ করে! আশিক কাউকেই হাজির করতে পারেনি গর্ভধারিণী মায়ের চরণে! এমন কি শাহজাদী কুসুম কেও নয়! এ হেন চরম ব্যর্থতার খেয়ালে আশিক মন মরা থাকতো সর্বক্ষণ। মুখের হাসির ছটা থাকলেও হৃদয়ে এক বুক শুণ্যতা কুঁড়ে কুঁড়ে খেতো লোক চক্ষুর অন্তরালে আড়াল হলেই!
আশিক কর্ম জীবনে পরিকল্পনা গ্রহণে ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহনের কারনে সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে বিভিন্ন জনের সানন্দ চিত্তে প্রদত্ত প্রপোজ, ইশারা ইঙ্গিতে দেওয়া প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার মত মস্ত ভুলের জন্য বিধ্বস্ত জীবনের হাত ছানি শুরু হয়ে যায়। সাহিত্য অঙ্গন, আইনাঙ্গন, সাংস্কৃতিক অঙ্গন তথা শিক্ষাঙ্গনের বান্ধবীদের আত্মার আকর্ষণও তাকে পিছুটানে আটকাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। সুন্দরের পিছনে ছুটতে গিয়ে সুরভীকে দুরে ঠেলে দিয়েছে আশিক।
কবির ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয় যে,
সুন্দর অসুন্দর নয়তো বড়ই তাৎপর্যময় এ জগত ধারায়-
সুন্দরী তার রুপ হারালেও যে গুনের কদরে মুল্যায়িত হয়,
রুপ যৌবন সেতো মরীচিকা মাত্র সময়ের সাথে ধূসর হয়-
রুপের চেয়ে তাৎপর্যে গুনেরই গ্রহন যোগ্যতা সর্বাগ্রে রয়!
আশিকের নিঃসঙ্গ জীবন কাটে কবিতার আঁচরে, গল্প বা কলাম নিবন্ধ লিখে! ভালোবাসার প্রিয় মানুষ গুলোর কথা মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে যায় কত জনের মুঁচকি হাতিতে প্রদত্ত প্রপোজের কথা। আবার নিজের দিক থেকে যাদের কে আবেগি মনে দেওয়া প্রস্তাবের কথাও! রিফিউজ হওয়া প্রস্তাবের পরক্ষনেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানকারীকে উৎসর্গ করে কাবা লেখার কথাও মনে পড়ে যায়।
হাজারো আঁচলে হাজার মায়ার চাঁদরে মঞ্জরিত নির্মোহ ভালোবাসার কথা সজাগ স্মৃতিতে বিমূর্তমান হতে থাকে।
আশিকের প্রতি আবেগ তাড়িত হয়ে অনক জনই মনো কষ্ট নিয়ে বদ দোয়া করে, অভিষাপ দেয়।
মনে পড়ে যায় শত-শত বুকের আর্তনাদে বলে উঠা মেয়েলী কন্ঠস্বর! মন ভাঙ্গা মেয়েরা বলে যায় একদিন আমার কথা, আমাদের কথা তোমার মনে পড়বে! আফসোস সেদিন আমরা হয়তো কেউ তোমার পাশে থাকবো না বা বৃদ্ধা হয়ে যাবো! হয়তো তোমার চোখেও দৃষ্টি কমতে থাকবে।
তুমি আমাদেরকে চিনতে পারবেনা হয়তো কন্ঠের আওয়াজ তোমার হৃদয়ে বাজবে!
তুমি না পাওয়া যন্ত্রনায় ও হারানো বেদনায় কাঁদতে কাঁদতে এদিক সেদিক চাইতে থাকবে আর বুক চাপড়াতে চাপড়াতে
মনে করবে প্রকৃতি ও সময়ের নির্মম প্রতিশোধ কিভাবে পরিশোধ হয়......
(তারিখঃ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং)
এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ
কবি-লেখক ও সাংবাদিক,
সভাপতি-
গ্রিনপিস বাংলা, পাবনা জেলা শাখা,পাবনা।