লেখক:- ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
কুরআন গীতা বাইবেল তওরাত কোথাও বলে নাই ধর্মীয় হানাহানি করতে, বলে নাই এক ধর্মের উপাসনালয় ভেঙে অন্য ধর্মের উপাসনালয় গড়ো। কিন্তু বাস্তবে আমরা ধর্মের নামে বিদ্বেষ ছড়ানো, উপসনালয় ভাঙা ধর্মের প্রধান কর্ম হিসাবে গ্রহন করেছি!
বিশ্বাস করুন আমি ৫ ম শ্রেনীর ইতিহাসে রামায়ন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ গজনীর সুলতান মাহমুদ ইখতিয়ার উদ্দিন বিন বখতিয়ার খলজির সাথে পরিচিত হয়েছি, পরিচিত হয়েছও পান্ডব রাজ্য দশরথ রাম রাবনের সাথে, পড়েছি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারন "সারাজাভোর" ঘটনা ৫ ম শ্রেনীতে, কিভাবে একজন যুবরাজ হত্যা নিয়ে যুদ্ধ টা বেঁধে গেলো। হতে পারে স্বল্প মাত্রায় জেনিছি কিন্তু স্পর্শ পেয়েছি সেই প্রাইমারি ছাত্র সময় থেকে। শ্রদ্ধায় মাথা নত করেছি বখতিয়ার খিলজির বাংলা বিজয়, সুলতান মাহমুদের ১৭ বার ভারত আক্রমণের সাহস দেখে। কিভাবে রাম-লক্ষণ সৎ মায়ের ইচ্ছা পূরনে জঙ্গলে চলে গেলেন, কিভাবে "ভরত" (সম্ভাবতঃ) অনিচছা সত্ত্বেও বড় দাদা রামের খড়ম জুতা সিংহাসনে রেখে ভাইয়ের নামে দেশ শাসন করেছেন!
উচ্চ বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে যখন কুরআনের অর্থ ইংরেজি তে পেয়ে ডিকশিনারির সাহায্য নিয়ে তর্জমা পড়া শুরু করলাম, বিদেশী ইতিহাসবিদদের ইতিহাস পড়া শুরু করলাম শুধু জানার আগ্রহে তখন দেখলাম
গজনীর সুলতান মাহমুদ, বখতিয়ার খিলজির কে নিয়ে গর্ব করার কিছু নাই। বখতিয়ার ১৭ জন সৈন্য নিয়ে রাজা লক্ষন সেন কে পরাজিত করে
বাংলায় মুসলিম ঝান্ডা উড়িয়েছিলেন ডাহা মিথ্যা কথা। তিনি নদীয়া দখল করে তিনদিন পর্যন্ত শুধু সোনাদানা লুট করেন এবং ফিরে আসেন তার আবাসে। অর্থাৎ বাংলার ১% ও জয় হয় নাই। লক্ষ্মণ সেন পালিয়ে যেয়ে উঠেন তার রাজধানী বিক্রমপুর এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাজা ছিলেন। আমার পূর্ব পুরুষ কবি আল মাহমুদ তো মুসলিম বিজয়ে ভাবে গদগদ হয়ে কাব্য লিখে ফেললেন "বখতিয়ারের ঘোড়া"! আমার তো বখতিয়ার কে নিয়ে কবিতা লিখতে ও ঘৃনা হয়। যদি বলি আল মাহমুদ ইতিহাস জানতেন না, আপনারা আমাকে ফাঁসিতে ঝুলাবেন, বাড়ীতে ঢিল ছুড়বেন!
কেন পোড়ালেন বিহারের সর্বকালের সর্ব বৃহৎ বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় " সালন্দা' যেখানে সারা বিশ্ব থেকে ১০ হাজারের উপরে ছাত্র পড়াশোনা করতো! যেখানকার লাইব্রেরি তে ছিলো লক্ষ লক্ষ বই যা আর কোনদিন ফিরে পাওয়া যাবে না! ইউনেস্কো হাতে নিয়েছে ঐতিহাসিক সেই বিশ্ববিদ্যালয় আবার গড়ে তুলতে! বিশ্বে সবসময় যেমন কিছু মনীষী আসেন তেমনি কিছু আহম্মকের ও আবির্ভাব হয়!
'
অপরিনামদর্শী দুর্নীতি প্রশ্রয় দানকারী ঢিলেঢালা প্রশাসনিক মানসিকতার নির্বোধ শাসক হাসিনা' পালিয়েছেন জনরোষে (মত ভেদে ষড়যন্ত্রে) কিন্ত
মুজিব রবীন্দ্রনাথ জয়নাল আবেদীন স্ট্যাচু কি দোষ করেছে? রাজনীতির সূতিকাগার ৩২ নাম্বার ধানমন্ডি যাদুঘর পোড়ানো কি স্বার্থে, ফিরে কি পাওয়া যাবে জাতির জনকের রক্তাক্ত জামা, চশমা, বই, বুলেট --- কই ১৯৭১ সালে ৯৩ হাজার বর্বর পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণের পর ক্ষুব্ধ জনতাকে একটাও ঢিল ছুড়তে দেন নাই তাদের পাহারায় নিয়োজিত সেক্টর কমান্ডার মেজর হুদা! কই কোন ধর্ষিত নারী বা সন্তান হারানো পিতা তো পাকিস্তানের জাতির জনকের জিন্নাহ র মাথায় প্রসাব করেন নাই? মানুষ আর হায়েনার পার্থক্য বুঝতে এর থেকে বড় উদাহরণ আর প্রয়োজন হয় না! মেজর হুদা, মেজর হায়দার, মেজর খালেদ মোশাররফ কে ১০ নাম্বার বেঙ্গলে নাস্তা রত অবস্থায় হত্যা করা হয় ৭ ই নবেম্বর ১৯৭৫ সালে অথচ এমন সুযোগ খালেদ হুদা হায়দার রা পেয়ে ও মেজর জিয়া মোস্তাক কে হত্যা করেন নাই! "রিসেট বাটন পুশ করার কথা" শুনি, rub of all previous history! ১৯৫২, ৬৬, ৬৯, ৭১ বাদ দিয়ে কি বাংলাদেশ হয়, হ্যা হয় যদি নাম পাল্টে পাকিস্তান - ২ রাখেন?
রাজাকে রাজনীতি জানতে হয়!
মুসলমানদের গর্ব গজনীর সুলতান মাহমুদ ১৭ বার ভারত আক্রমণ করেছেন ১৬ বার ব্যর্থ ১৭ বারে জয় পেয়েছেন। তিনি ভারতের কোষাগার লুন্ঠন করেছেন সপ্তাহ ধরে এবং ২ কোটি স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে যান। মেনে নিলাম তার লোভ লালসা, কিন্তু " সোমনাথ " মন্দির কেন ভেঙেছেন? ইরান পাকিস্তান আফগান ভারতের গুজরাত সহ বিরাট আয়তন শাসন করেছেন। কয়জন লোক মুসলম হয়েছে তার ইসলামি আহ্বানে ৯৯৭ থেকে ১০৩০ পর্যন্ত শাসন আমলে। ইসলাম প্রচার কেউ করেন নাই, তাহলে দিল্লি সবার রাজধানী ছিলো সেখানে আজও ১৮% মুসলমান কেন? কেন তরবারির ভয়ে তো ৮০% মুসলমান আজ থাকার কথা!
সোমনাথ মন্দির আবার প্রতিষ্ঠিত হয় ১০২৬ সালে এমনি ১০ বার মন্দির টি ভেঙে মসজিদ হয়েছে মসজিদ ভেঙে মন্দির হয়েছে!
সব শেষ মন্দির ভেঙে মসজিদ করেন আওরঙ্গজেব সম্ভবতঃ ১৩৭৫ সালের দিকে বাদশাহ শাহজাহানের সুপুত্র যিনি ভাইকে হত্যা ও বাপ কে বন্দী করা মুসলমান।
প্রিয় পাঠক, ১৭৮৩ সালে সোমনাথ মন্দির আবার স্হাপন করেন ইন্দোরের রানী "অহল্যা" !
পাশাপাশি কেন মন্দিরে কাছেই মসজিদ হলো না বা মসজিদের কাছে মন্দির হলো না! এমন কোন রাজা বা বাদশাহ ধর্ম পরায়ন ছিলেন আমি মানতে নারাজ!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালো বাসেন।