০১- বিদ্রোহের বাণী
এই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি যেন অগ্নি ঝর্না,
আসবেই নিয়ে দহনের বন্যা।
পুরে হবে চারখার অপমান, অবহেলা,
তবু হবে না থামা, থাকবে বিদ্রোহের জ্বালা।
ভাঙবে যত স্বপ্ন, তবু থামবে না এ পথ চলা,
বন্ধনগুলো ভেঙে ফিরে আসবে স্বাধীনতার পালা।
দহন হোক যতই, পুড়ে যাক সব ক্লান্তি,
এই বহ্নি মাঝে আসবেই জ্বলে আমার আশার জ্যোতি।
কত শুনেছি আশার বাণী, আর কত যে তিরস্কার,
তাই তো বুকের গভীরে ধ্বনিত হচ্ছে বিদ্রোহের হুঙ্কার।
এই ক্রোধ জমায়িত হুঙ্কার কভু থামিবার নয়,
এই হুঙ্কারে তুলব প্রলয়ের ঝড়, যেখানে লুকায়িত জয়।
যে আগুন জ্বলেছে একবার, তা নিভে না কখনো,
আগুন তো কয়লার নয়, যে আগুন জ্বলেছে মনো।
শৃঙ্খল ভাঙার মাঝেই তো লুকায়িত শক্তি,
এই বিদ্রোহের পথেই একদিন মিলবে মুক্তি।
০২- কূলের সন্ধানে
জীবন নামের নৌকা মাঝি, কোন দিকে যে বাও।
সময় যেথা ঢেউ তুলে, তুমি তার উল্টো দিকেই যাও।
এত বছর চলছো তরী, তবু কূলের খবর নাই পাও,
বুঝি না তোমার মন রে মাঝি, কী যে তুমি চাও।
আমারে দিয়া কত ব্যথা, চলছো তুমি যেথা সেথা।
শোনো না তুমি আমার কথা, আমি যেন ঝরা পাতা।
অন্তরে শুধুই দুঃখ গাথা, স্মৃতির বৃষ্টি বাড়ায় ব্যথা।
তোমায় বুঝাই কেমনে, ডুবে আছি হৃদয়ের রক্তক্ষরণে।
থাকবো আর কতদিন, আমি এমন কূলহীন।
জীবন তো থেমে নাই রে, সময়ের পাল উড়ছে প্রতিদিন।
কেন আসলাম এই ভবে, যদি শুধু কষ্টই হবে।
সুখ কি কভু হবে, নাকি দুঃখের রংয়ে জীবন রয়ে যাবে?
তুমি কি দেখো না মাঝি, আকাশের ঐ আলো।
সেখানেই আছে আমার কূল, যেখানে নেই ঢেউয়ের চায়া কালো।
সুখের পথে যাও ঢেঙে, দুঃখের কালো ছায়া ভেঙে।
তোমার হাতের শক্তিতে, আমার নৌকাকে দাও আগাইয়া, আমায় কূলে দাও ভিড়াইয়া।
০৩- আত্মার যাত্রা
আমরা আসছি মাটি থেকে, আবার যাবো মিশে মাটিতে।
থাকবো আমরা কয়েকটা দিন, এই পৃথিবী নামক ঘাটিতে।
ঘুমাই আমরা এখন, কতই না রঙ বেরঙের পাটিতে,
একদিন আমরা ফিরে যাবো আবার সেই চিরচেনা ভূমিতে।
মানুষ হয়েছি কত ভাগে, দলাদলি আর জাতিতে,
মেতেছি আমরা এক ভাই, অপর ভাইয়ের ক্ষতিতে।
বয়ে চলে দ্বন্দ্ব রক্তের মাঝে, মামা-ভাগ্নে, দাদা-নানা, আর নাতিতে,
সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি, আমরা কি পারবো কভু এসব ভুলিতে?
নিশ্চুপ থাকে হাজারো মানুষ, এক মানুষের ঝাড়িতে,
কত মানুষকে করেছি নিঃস্ব, ভুলেই গেছি ভাবিতে।
থেমে নেই যে জীবন, চলছে নিজ গতিতে,
হঠাৎ থেমে যাবো আমরা, পারবো না আর চলিতে।
কত সুন্দর গড়েছি যে বাড়ি, পারবো কতদিন তাতে থাকিতে,
ক্ষীণ হবে একদিন রূপ, ম্লান হবে যৌবন তবু পাগল আমরা মোহিতে।
পড়ে আছি মহাজাগতিক মায়ায়, পারি না এসব ছাড়িতে,
চলে যেতে হবে খুব তাড়াতাড়ি, সাড়ে তিন হাতের বাড়িতে।