প্রিয়াংকা নিয়োগী, কোচবিহার, ভারত।
ভূমিকা: শান্তিপূর্ণ জীবন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও সমাজ
গঠনের জন্যই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। শান্তিপূর্ণ জীবন
শান্তি বিকাশের পটভূমি।শান্ত পরিবেশ শান্তির উৎকর্ষ।
জীবনে সবকিছু থাকবে।তবে সবসময়ই ঝগড়া,অশান্তি
এড়িয়ে চলতে হবে।তবে শান্তি স্থাপনের জন্য প্রত্যেক মানুষের ব্যক্তিগত ভূমিকা থাকে।একেকজন মানুষ একেকরকম হলেও শান্তিপূর্ণ আচরণ প্রত্যেক মানুষেরই একইরকম। সমাজ শান্ত রাখার জন্য
প্রত্যেক মানুষের সমভূমিকা থাকে।
করণীয় কি?
শান্তিপূর্ণ মানসিকতাই পারে শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপে এগিয়ে নিতে। শান্তিপূর্ণ চিন্তা ভাবনার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে শান্তিপূর্ণ বিচরণের মাধ্যমে। শান্তির প্রচার,প্রসার ও পদক্ষেপের জন্য শান্তি বিষয়ক সম্মেলন অত্যন্ত জরুরী।
বর্তমানে দাঁড়িয়ে অনেকেই শান্তি বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারেনা। কোন মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখলে সুরক্ষিত থাকবে, কিভাবে কথা বললে মানসিকতা ঠান্ডা থাকবে বা অপরের সাথে কথাবার্তার ধরণ কেমন হতে পারে সেটা নিয়েও ভাবতে হবে।শুধুমাত্র সংঘাত দেখলে হবে না, মানুষ অনেকসময় মানসিকতা গরম করে দেওয়ার জন্যও
আসে কথা বলতে,সেক্ষেত্রেও মানসিক উত্তেজনা তৈরী হয়।
শান্তি বজায় রাখার জন্য ব্যাক্তিগত ভালো থাকা আগে জরুরী ।তার সাথেই পারিবারিক,পারিপার্শ্বিক ভালো থাকাও জরুরী।তাই নিজেকে যেমন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে,তেমনি নিজের জীবনের সাথে যুক্ত পরিবেশেও খাপ খাওয়াতে হবে।আপনি নিজে শান্তিপূর্ণ মানসিকতায় থাকলে তবেই আপনি শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও পরিবেশ তৈরী করতে পারবেন।তাই নিজের মানসিক শান্তির যত্ন নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরী।
শান্তি বলতে যেসব মানুষদের নাম আসে গান্ধীজী,নেলসন ম্যান্ডেলাসহ আরও অনেকের।
সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ইনাদের ভূমিকা যথেষ্ট।
মানসিক প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরী শান্তিপূর্ণ জীবনের জন্য।যে কোনো উত্তাল পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ মনোভাব ও আচরণ দ্বারা নিয়ন্ত্রণ দরকার।জীবনে অনেক কিছুই হবে,তবে নিজেকে ভালো পথে রাখতে হবে,ভালো কাজগুলো করতে হবে।
সমাজের উন্নতির ক্ষেত্রে শান্ত পরিবেশের প্রভাব অনেকটাই।পরিবেশ ও সমাজ যতো শান্ত হবে
সমাজে নিশ্চিন্তে কাজকর্ম করা যাবে। দৈনন্দিন জীবন
নিশ্চিন্তে পার করার জন্য শান্ত পরিবেশ প্রয়োজন।
এক্ষেত্রে সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
সকলকে অহিংসা মনোভাব নিয়ে এগোতে হবে।
একে অপরের সহযোগি হয়ে সহযোগি আচরণ করতে হবে।
জীবন সুন্দর করতে হলে শান্তির পথ অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে। আর শান্তির জীবন সুন্দর হলেও শান্তিপূর্ণ জীবনের জন্য মেপে চলতে হবে।নিজের শান্তি রক্ষা ও সৃষ্টি করা দুটোই নিজের উপর থাকে।
বর্তমান যুগে দাঁড়িয়েও অনেক মানুষ ঠিকমতো শান্তি বিষয়টা বুঝতে পারেনা,নিজের জীবনকে সুরক্ষিত রাখার বিষয়টিও ভাবনার বাইরে থাকে।তাই প্রতিটি এলাকার মানুষদের উচিত হবে নিজ এলাকায় এলাকাবাসীদের নিয়ে মাসে অন্তত একটা শান্তির সম্মেলন করা। শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপে জড়িয়ে রাখতে হবে এলাকাবাসীদের।সাথে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ নির্মাণ অত্যন্ত জরুরী।শান্ত পরিবেশে জ্ঞানের সমন্বয় এক উৎকর্ষ তৈরী করবে।
শান্তির ভাবনা গাঁথতে প্রাইমারি বিদ্যালয় থেকে শুরু করে উচ্চ বিদ্যালয়,কলেজ, ইউনিভার্সিটি স্তরে বছরে একটি শান্তির সম্মেলন করা দরকার।যাতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শান্তির ভাবনা ও ধারণা গাঁথে। নৈতিকতা, আদর্শবোধ ও বুদ্ধিমত্তা জীবনকে মার্জিনে রাখে।
সেইসব মানুষ থেকেও দূরে থাকতে হবে যারা ইভটিজিং করে বা আপনার জন্য টক্সিন ধরনের মানুষ।কারণ মন ব্যথিত থাকলে কখনো ভালো থাকা যায় না। কখনও মানুষও মানুষের ভালো দেখতে পারেনা,তাই কষ্ট দেয়।তাই উচিত সেইসব মানুষদের সংস্পর্শে থাকা যাদের সাথে থাকলে মন ভালো থাকবে।
যদিও শান্তিপূর্ণ জীবনের ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশটাই আগে ধরা হয়, কিন্তু শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য দৈনন্দিনভাবে
জড়িত সব দরকার ।যেমন খাদ্য,বস্র,বাসস্থান,
পেশা।এই প্রাথমিক বিষয়গুলো ঠিক থাকলে তবেই
শান্তি অনুভব হবে।তবে জীবন ধারণের দৈনন্দিন সবকিছু কম থাকলেও চলবে,তবে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো চাই ভালো জীবনের জন্য।জীবন ভালো থাকলে তবেই শান্তি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।আর জীবনে শান্তি থাকলে ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এগোনো যাবে।
আর বুঝে ও মেপে চলাও অত্যন্ত জরুরী। কারণ কোনো মানুষ ঠকে গেলে তার অনুশোচনা হয়, কষ্ট হয়।আর তখন তার মনে জ্বালা করে ও ব্যথিত হয়।এই অবস্থায় কোনো মানুষ ভালো থাকতে পারে না।তার শান্তিও থাকে না।
তবে কখনোও শান্তি স্থাপনের জন্যে প্রতিবাদ করতে হবে। অর্থাৎ দুভাবে শান্তি ধরে রাখতে হবে।
যেমন –
ভালো ও শান্ত আচরণের মাধ্যমে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো।
অন্যায়কে প্রশ্রয় না দিয়ে,অন্যায়ের প্রতিবাদ করে অন্যায় থামিয়ে দিয়েও শান্তি বজায় রাখা যায়।
উপসংহার:সুন্দর জীবনের ভূমিকায় শান্তি একটি ব্রিজের মতো।তাই এই শান্তিনামক ব্রীজটি যার জীবনে যতো শক্ত হবে, ততো তিনি মানসিক শান্তি পাবে।নিজের মনের সাথে কথা বলার সময় বলতে হবে আমি শান্তিতে থাকব,আমি শান্তিপূর্ণ কাজ করব।নিজের ব্রেইন এর সাথে কথা বলার সময়ও বলতে হবে আমি শান্তিতে থাকব,আমি শান্তিপূর্ণ আচরণ করবে।