নিজস্ব প্রতিবেদক:
আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান চিকিৎসক, বরেণ্য টিভি উপস্থাপক পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ও সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সাপোর্টারস ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা, স্পিন ডক্টর, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক, মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব, আমেরিকা প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা ক্লিনটন হাওলাদার পাভেল । শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো একটি শোক বার্তায় তিনি এ শোক প্রকাশ করেন। তিনিনশোক বার্তায় বলেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে ক্ষতি হলো তা অপূরণীয়। তিনি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে নিজের প্রতিষ্ঠিত উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বদরুদ্দোজা চৌধুরী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়ে এবং নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। উল্লেখ্য , 'ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় গত ২ অক্টোবর সকালে বি চৌধুরীকে উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিন বি চৌধুরীর মেয়ে ডা. শায়লা চৌধুরী জানান যে, তার বাবা আগে থেকেই স্কিমিক হার্ট ডিজিজেস ভুগছিলেন।'
উল্লেখ্য বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে নানা বাড়িতে (প্রখ্যাত 'মুন্সেফ বাড়ি') জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহ- সভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৪৭ সালে ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বি আইএসসি পাস করার পর ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি লন্ডনের রয়াল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস, এডিনবার্গ ও গ্লাসগো থেকে এফআরসিপি এবং এসসিপিএস লাভ করেন। ঢাকায় মেডিসিন বিভাগের খ্যাতিমান চিকিৎসক হিসেবে দীর্ঘদিন মানুষের চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন তিনি।
বি চৌধুরী বাংলাদেশ টেলিভিশনে 'আপনার ডাক্তার' নামের একটি অনুষ্ঠান পরিচালনা করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান খ্যাতিমান এই চিকিৎসককে রাজনীতিতে যুক্ত করতে ১৯৭৮ সালে নিজের প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির প্রথম মহাসচিব করেন। বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগ থেকে ১৯৭৯, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সাদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। জিয়াউর রহমানের সরকারে তিনি উপ প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সরকারে শিক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।
পরে বি চৌধুরী বিএনপি ছেড়ে ২০০৪ সালের ৮ মে 'বিকল্পধারা বাংলাদেশ' নামের রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি আমৃত্যু দলটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন।