সিলেট প্রতিনিধি:
সিলেট সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের ইউনানী বিভাগের সিনিয়র প্রভাষককে ডিঙ্গিয়ে আওয়ামী শাসনামলে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ডা: জাকি ইব্রাহিম, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা: ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল এর দলীয় প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, কমিশন বাণিজ্য, ভূমিখেকো চক্রের সাথে আতাতসহ এন্তার অভিযোগ রয়েছে। ডাঃ জাকি ইব্রাহীমের চাকুরী নিয়মিত না থাকা সত্বেও বিধিবহির্ভূত ভাবে দুইটি টাইমস্কেল-সিলেকশন গ্রেড নিয়েছেন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যোগদান করে পদায়ন অপেক্ষামান থাকাবস্থায় আওয়ামীলীগের নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে ও ছত্রছায়ায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন।
২০২৩-২০২৪ অর্থ বৎসরে প্রতিষ্ঠানের ঔষধক্রয়ে তুঘলকি কান্ড ঘটিয়েছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা: জাকি ইব্রাহিম। হাসপাতালের এ্যালোপ্যাথিক ও আয়ূর্বেদিক মেডিকেল অফিসার না থাকা সত্ত্বেও কমিশন ঠিক রাখতে একটি কোম্পানীর এ্যালোপ্যাথিক প্রোডাক্ট এবং আয়ূর্বেদিক প্রোডাক্ট দরপত্রে সিডিউলভুক্ত করা হয়েছে। গত ০৭ মে ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত টেন্ডার বিজ্ঞপ্তির ৪ নম্বর কলামের দরপত্র ক্রয় বাবদ চালানের কোড নম্বর ১৪২২৩২৮ এ কোন টাকা জমা হয় নাই এবং ১৪ নম্বর কলামে দরপত্র খোলার তারিখ ও সময় ১৯ মে ২০২৪ হওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও ২০ মে ২০২৪ (সোমবার) দরপত্র খোলা হয়েছে। এতে দরপত্রে অংশগ্রহণকারীদের জানানো হয় নাই। অত্যান্ত সংগোপনে সবকটি দরপত্রের সিডিউল ঘষা-মাঝা করে ঔষধ কোম্পানীর নিকট হতে কমিশনে ঔষধ ক্রয় করেন।
তদন্ত আসে তদন্ত যায় কাজের কাজ কিছুই হয় নাই, তার পরও ডা. জাকি সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত করে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের পরিকল্পনা-২ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ মহসিন উদ্দিনকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে এবং সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে সিলেটের জেলা প্রশাসক সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরীকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সিভিল সার্জন প্রতিনিধি দলের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: জম্মে জয় দত্ত, তদন্তে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে। ডাঃ জাকি ইব্রাহিম ও ডাঃ মোঃ জহিরুল হকের সকল অনিয়ম-দুর্নীতি করতে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে পত্র জারী করেন।
সম্প্রতি জাতীয় ও স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় সিলেট সরকারি ইউনানী আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনিয়ম প্রকাশিত হলে টনক নড়ে সিলেটের প্রশাসনের ব্যক্তি বর্গের। প্রতিষ্টান টির প্রভাষক ডা. জাকি ইব্রাহিম ও আব্দুল জলিল লাইসেন্স বিহীন ভাবে সুন্নাহ এন্ড ট্রাডিশনাল মেডিসিন সেন্টার গড়ে তুলেন সিলেটের কুমারপাড়ায় এবং সিলেটের মিরাবাজারে সুন্নাহ কেয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে সাধারণ মানুষের সাথে রীতিমতো প্রতারণা করছেন। কলেজে ইলেক্ট্রনিক ডিজিটাল হাজিরা না থাকায় ডা. জাকি কলেজে না এসেও একদিনে সারা মাসের হাজিরা দিয়ে চলে যায় সোবহানীঘাটের বাসায় অফিস করেন, ডা. জাকি ইব্রাহিম সিলেট কুমারপাড়া একটি অবৈধ হিজামা প্রশিক্ষণ সেন্টার খুলে কলেজের হিজামা যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, ডা. জাকি ইব্রাহিম এর অর্থের প্রতি লোভ সবসময়, জাকি ইব্রাাহিমের পরিবার সিলেটের মেট্রো সিকিউরিটিজ কোম্পানীর সমগ্র টাকা আত্মসাৎ করলে পরবর্তীতে ধরা খেয়ে ফেরত দিতে বাধ্য হন।
ডা. জাকি ইব্রাহিমের আপন ছোট ভাই রাফি ইব্রাহিম সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বয়স গোপন করে, জাল সনদ তৈরি করে চাকরী নিলে দূর্নীতি দমন কমিশনে মামলা হয়। কর্মস্থলে না এসেও হাজিরা খাতায় উপস্থিত শীর্ষক শিরোনামে ০৪ মার্চ ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে দৈনিক নয়া দিগন্ত এবং ০৫ মার্চ ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকায় পরপর দুটি সংবাদ প্রকাশিত হলে কলেজ কতৃর্ক এসব অনিয়ম তদন্তের জন্য দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিঠি গঠন করেন। কলেজের তারিখ ০৩ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ; স্মারক নং এফ-১৮২/সইআ(মকহা/ ২০২৪/২৭৩ নম্বরপত্রে তদন্ত কমিঠি গঠন হলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত বানচাল করেন।
ডা. জাকি ইব্রাহিমের প্রত্যক্ষ সহায়তায় কলেজের পুরাতন ক্যাম্পাসের ২৬ শতক জমি বেদখল হয়েছে এবং আরো ৩২শতক ভূমি বেদখল করতে ডা. জাকি ইব্রাহিম ওতপ্রোত ভাবে জড়িত রয়েছে, জেলা প্রশাসকের তদন্তে বিষয়টি উঠে এসেছে। ডা. জাকি ইব্রাহিম কলেজের নামে বরাদ্দকৃত মোবাইল ফোন এবং মডেম এবং হিজামা যন্ত্রপাতির সেট নিজের বাসায় নিয়েছেন এবং ডা. জাকি ইব্রাহিম সেচ্চাচারিতা, সরকারী কাজে ফাঁকি দেওয়া এবং সরকারী সম্পত্তি আত্মসাৎ এর অভিযোগ তদন্তের জন্য কমিঠি গঠিত হয় সিলেট জেলা প্রশাসকের স্মারক ৫৯.০০.০০০০.১১১.৯১.০৪০.২৩.৪৬: তাং ০৭.০৩.২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না, প্রতিষ্ঠান শুধু ধংস হচ্ছে।
এ সংক্রান্ত একটি নিউজ জাতীয় দৈনিক “দৌড়” পত্রিকায় গত ১৪ মে ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত হয় এবং কয়েক দফায় প্রশাসন বৈঠক করে কোন সমস্যা সমাধান করতে পারেন নি।