মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন

সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটে বৃষ্টিতে সবজি ও মাছের ৫০কোটি টাকার ক্ষতি ২১ হাজার কৃষক পরিবার বিপাকে

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৭ Time View

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূলীয় শস্যভাণ্ডার নামে খ্যাত উর্বর ভূমি বাগেরহাটের নয়টি উপজেলায় বৃষ্টিতে সবজি ও মাছে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে সাড়ে ৭ হাজার মাছের ঘের। ফসল নষ্ট হয়েছে ২১ হাজার কৃষকের। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও জেলা মৎস্য অফিসের সর্বশেষ হিসেবের পর এই তথ্য জানা গেছে। তবে চাষিদের দাবি ক্ষয়ক্ষতির এ পরিমাণ আরো অনেক বেশি হবে। এ ক্ষতির কারণে ঋণগ্রস্থ কৃষকেরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার জানান, বাগেরহাটে রোপা আমনের ৪৫৩০ হেক্টর জমি, সব্জির ২১৬ হেক্টর ও পানের ৩৭ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত ছিল। এতে ২১ হাজার ১৩৬ জন কৃষকের ৩৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অন্যদিকে মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবারের বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে গলদা চিংড়ি উৎপাদনের অন্যতম এলাকা জেলার ফকিরহাট, চিতলমারী ও মোল্লাহাট উপজেলার চাষিরা। এর সাথে মোংলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার চাষিদের ক্ষতির পরিমাণও কম নয়। চাষিদের দাবি কয়েকশ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে এই পানিতে। চিতলমারী উপজেলার বারাশিয়া বিলের মেসার্স জাহিদ ট্রেডার্সের মালিক জাহিদুল ইসলাম জানান, ওই বিলে তার প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে মাছের ঘের রয়েছে। সেখানে চিংড়িসহ অনেক প্রজাতির মাছ রয়েছে। আর কয়েকদিন পরে তিনি মাছ ধরা শুরু করবেন, এমনটাই ভেবেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ঘের ডুবে সব মাছ বের হয়ে গেছে। এখন তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে জানান।
ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা এলাকার কাজী মিরাজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির পানিতে ঘের ডুবে একাকার হয়ে গেছে। ঘেরের পাড়ের উপর হাটু পানি ছিল। নেট, কচুরিপানা ও ঘাষ দিয়ে মাছ ভেসে যাওয়া ঠেকানোর চেষ্ঠা করেছিলাম কিন্তু কতদূর আছে জানিনা। মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদী তীরবর্তী পৌরসভাসহ কমপক্ষে ৪০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ডুবে গেছে ৩ শতাধিক মৎস্য ঘের। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ১ হাজার হেক্টর ফসলি জমির রোপা আমন ধানের ক্ষেত।এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, ৪ দিনের প্রবল বর্ষণে উপজেলার নিচু এলাকার মৎস্য ঘেরগুলো তলিয়ে গেছে।ডুবে গেছে ৩ শতাধিক মৎস্য ঘের।১ হাজার হেক্টর সবজির ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ১ হাজার হেক্টর ফসলি জমির রোপা আমন ধানের ক্ষেত।এতে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। চাষিদের ঘুরে দাঁড়াতে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল বলেন, জেলার সাড়ে ৭ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। চাষিদের ঘুরে দাঁড়াতে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
গত শুক্রবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বিরামহীন বৃষ্টিতে বাগেরহাটে এই ক্ষয়ক্ষতি হয়। চিংড়ি সেক্টরকে টিকিয়ে রাখতে চাষিদের সরকারি সহায়তা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102