তোফায়েল আহমদ: সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো চীফ:
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার
বৃহত্তর সিলেটের অরাজনৈতিক কল্যাণমূলক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন সিলেট কল্যাণ সংস্থা (সিকস), সিলেট বিভাগের যুব সংগঠন, আত্মকর্মী ও বাংলাদেশ প্রেমী সৃষ্টিশীল যুবদের সমন্বয়ে এ প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক যুব সংগঠন সিকস’র অঙ্গ সংগঠন সিলেট বিভাগ যুব কল্যাণ সংস্থা (সিবিযুকস) এবং বাংলাদেশী প্রবাসীদের সবধরনের দাবী উপস্থাপনের বলিষ্ঠ অরাজনৈতিক সংগঠন সিলেট প্রবাসী কল্যাণ সংস্থা (সিপ্রকস)-এর যৌথ উদ্যোগে ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬.৩০ ঘটিকায় সিকস’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২৪তম সাপ্তাহিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পাসপোর্ট অফিস ও বিআরটিএ অফিসের রমরমা ঘুষ বাণিজ্যের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সাথে জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরীতে সহজীকরণ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, জন্মনিবন্ধন সনদ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। অথচ নাগরিকের পরিচয়ের প্রথম মাধ্যম জন্মনিবন্ধন। সেই জন্মনিবন্ধন তৈরীতে রয়েছে চরম ভোগান্তি। জন্মনিবন্ধন হাতে পেয়ে মানুষ বিভিন্ন ধরণের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে। শুরুতেই জন্মনিবন্ধন তৈরীতে সবধরনের প্রতিকুলতা দুর করতে না পারলে অন্য কোনো কাজ করা সম্ভব হয়। ১৮ বছর হওয়ার পরেই প্রয়োজন জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি। দেশের নাগরিকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কার্ড এখন জাতীয় পরিচয়পত্র। পাসপোর্ট করা থেকে শুরু করে বিদেশ ভ্রমণ, সরকারি অফিসের সকল কাজ, ব্যাংক, বীমা-আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবখানেই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শুধু তাই নয় এনআইডিতে সামান্য ভুল হলে তা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এতো গুরুত্বপূর্ণ এই কার্ডে ভুল থাকার কারণে প্রতিনিয়তই নাগরিকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। আর এই ভুল সংশোধন করতে সাধারণ মানুষকে হতে হচ্ছে নানান হয়রানি। মাসের পর মাস ঘুরেও ভুল সংশোধন করা যাচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষের সময় ও অর্থ নষ্ট হচ্ছে। দিনের পর দিনে ভুল সংশোধন ও নতুন এনআইডি কার্ড করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসে ঘুরে সেবা না পেয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়ছেন নাগরিকরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এনআইডি সংশোধন ও নতুন এনআইডি কার্ড করাকে একটি জটিল প্রক্রিয়া হিসেবে নাগরিকদের কাছে উপস্থাপন করেন ও বিভিন্ন অজুহাতে হাজার হাজার আবার কখনো লক্ষ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাবি করে বসেন অসাধু কর্মকর্তারা। কোনো ক্ষেত্রে এনআইডি কার্ডে তৈরী ও ভুল সংশোধনের প্রবাসী ব্যক্তি হলে সেই অঙ্ক আরও অনেক বেশি হয়।
বক্তারা আরো বলেন, পাসপোর্ট অফিস ও বিআরটিএ অফিস থেকে সবধরনের মার্কা ও দালালদের দৌরাত্ব দুর করতে হবে। ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণ করে বৈষম্যহীন প্রকৃত দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। সাধারণ জনগনের জন্য প্রকৃত সেবাকারী প্রতিষ্ঠার হিসেবে পাসপোর্ট অফিস ও বিআরটিএ অফিসকে সমপযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সবধরনের বৈষম্য দুর করে পাসপোর্ট অফিস ও বিআরটিএ অফিসকে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। বক্তারা জন্ম নিবন্ধন তৈরীতে সহজীকরণ, জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী, পাসপোর্ট অফিস ও বিআরটিএ থেকে দুর্নীতি দূর করার জোর দাবি জানান।
সভায় উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতের *আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকাল ৩.০০ ঘটিকায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে জন্ম নিবন্ধন তৈরীতে সহজীকরণ, জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী, পাসপোর্ট অফিস ও বিআরটিএ অফিস থেকে দুর্নীতি দূর দাবিতে ২ ঘন্টার অবস্থান কর্মসূচী উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।
জাতীয় যুব দিবস-২০১০ এ জাতীয় যুব পুরস্কার শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক পদকপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সিলেট কল্যাণ সংস্থার কার্যকরী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ এহছানুল হক তাহেরের সভাপতিত্বে ও সিবিযুকস’র সিলেট মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম শিতাবের পরিচালনায় সভায় বিভিন্ন মতামত উপস্থাপন করে বক্তব্য রাখেন সংস্থাগুলোর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও সিকস’র কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিয়াউর রহমান, সিকস’র অঙ্গ সংগঠন সিলেট বিভাগ যুব কল্যাণ সংস্থার বিভাগীয় কমিটির যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ আল-আমিন আহমদ, মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি জাকারিয়া মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সাকের, সহ-সভাপতি মাসুম মিয়াজী, প্রচার সম্পাদক দিপক কুমার মোদক বিলু, সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান ও সিলেট জেলা কমিটির প্রচার সম্পাদক পিযোষ মোদক।
উল্লেখ্য, বন্যার্তদের পুনর্বাসনের জন্য সংগ্রহকৃত অর্থ সিলেট কল্যাণ সংস্থার সাংগঠনিক অবস্থান থেকে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের কাজে লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় ও সবসময় যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সিলেট কল্যাণ সংস্থার সাংগঠনিক তৎপরতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে “প্রাকৃতিক দুর্যোগ তহবিল” গঠন করা হয়।
সভায় সিলেট কল্যাণ সংস্থার প্রাকৃতিক দুর্যোগ তহবিলে অনুদান প্রদান করেন মোঃ আবুল হোসেনের পক্ষে মোঃ আল-আমিন আহমদ (৫০০), জাকারিয়া মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সাকের (৫০০) ও পিযোষ মোদক (১০০)। মোট =১,১০০/- (এক হাজার একশত) টাকা অনুদান গ্রহণের মাধ্যমে সিলেট কল্যাণ সংস্থার “প্রাকৃতিক দুর্যোগ তহবিল”-এর কার্যক্রম শুরু হয়।