শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন

এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় উদ্যোক্তা এলিট ও পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্যের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Sanu Ahmed
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩
  • ৬২৩ Time View

মোঃ আজগার আলী, জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরাঃ
দেশে যতদিন অতিবাহিত হচ্ছে তত দুর্নিতিবাজরা কড়া নিরপত্তার ভিতর তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তিন বছর আগে ৩ লাখ টাকা পোস্ট অফিসে ফিক্সড ডিপোজিট করেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ঘোনা নারানপুরের বাসিন্দা আসমা বেগম। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় আরও তিন বছরের জন্য ৪ লাখ টাকা দুই ভাই-বোনের নামে রাখার জন্য পোস্টমাস্টারকে বলেন তিনি। ব্যাংক এশিয়ায় ইজি ফরম জমা দিয়ে রিসিট দেখান পোস্ট মাস্টারকে। দুই দিন পর বই নিতে গেলে জানতে পারেন পোস্ট মাস্টারের বদলি হয়ে গেছে।
শুধু আসমা নন একইভাবে ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে গিয়ে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন উপজেলার শাহাপুর গ্রামের সুফিয়া বেগম, হরিশ্চন্দ্রকাটি গ্রামের মান্নান গাজীর স্ত্রী কামেলা বেগম, হাজরাকাটি গ্রামের নিমাই কুমার শীলসহ আরও অনেকে।
তালার ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় উদ্যোক্তা আতাউর রহমান এলিট ও পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্যের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের এ অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পরস্পরের যোগসাজশে গ্রাহকদের প্রায় অর্ধ-কোটি টাকা আত্মসাৎ করার। এ দিকে গ্রাহকের লোপাট হওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বস্ত করেছে ব্যাংক এশিয়া।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, এ ঘটনার পর ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকটির উদ্যোক্তা আতাউর রহমান এলিটকে পাওয়া যাচ্ছে না। পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্য কৌশলে বদলি হয়ে গিয়েছেন।
ভুক্তভোগী আসমা বেগম বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি আমার ও ভাইয়ের নামে দুই লাখ করে চার লাখ টাকা জমা দিয়ে পোস্ট মাস্টারকে রিসিট দেখায়। তখন তিনি বলেন, ‘দুদিন পরে বই নিয়ে যাবেন। দুদিন পরে গেলে বলেন বই এখনো আসেনি, আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। এ ভাবে আমাদের ঘোরাতে থাকে। পরে শুনি তার বদলি হয়ে গেছে।
একই ধরনের কথা বলেন, চরগ্রামের মৃত আলাউদ্দিন শেখের মেয়ে ফারজানা খাতুন ও তার মা আলেয়া বেগম। তাঁদের থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি একইভাবে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে নয় লাখ টাকা আত্মসাৎ হয়।
শাহাজাৎপুর গ্রামের শুকুর আলী গাজী বলেন, ২ ফেব্রুয়ারি তিন বছর মেয়াদে চার লাখ টাকা রাখতে গিয়েছিলাম পোস্ট অফিসে। এ সময় পোস্ট মাস্টার এলিটের কাছে নিয়ে যান। পরে এক সপ্তাহ পর বই নিতে গেলে পোস্ট মাস্টার বলে এখনো হয়নি। এর তিন সপ্তাহ পর তাঁদের আর পোস্ট অফিসে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে ১ মার্চ তালা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
পোস্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে আতাউর রহমান এলিট তালা পোস্ট অফিসের উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে ২০২০ সালে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট হিসেবে আর্থিক লেনদেন শুরু করে।
অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে তালা পোস্ট অফিসের সাবেক পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সত্য নয়। আমার কাছে গ্রাহকেরা আসলে আমি অনলাইন ফরম পূরণের জন্য এলিটের কাছে পাঠাতাম। ওখানে লেনদেন করলে সেটা তাদের ব্যাপার। পোস্ট অফিসের সঙ্গে ব্যাংক এশিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এ বিষয়ে জানতে আতাউর রহমান এলিটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
তালা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মধুসূদন বাছাঢ় বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ব্যাপারে অনেকে অভিযোগ নিয়ে এসেছেন। কিন্তু কত টাকা আত্মসাৎ হয়েছে এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।
ব্যাংক এশিয়ার বিজনেস অফিসার শারাফাত হোসেন বলেন, প্রায় ৫০ লাখ টাকা নানাভাবে ব্যাংক থেকে খোয়া গেছে বলে আমরা ধারণা করছি। গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। টাকা আত্মসাতের বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরি রেজাউল করিম, টাকা আত্মসাতের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বাদী ও বিবাদী পক্ষকে থানা ডাকার পর তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102