রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি ;
নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলাধীন বাউসী ইউনিয়নে (৮৪) বছরের পুরানো একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়’। বাউসী ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্বাক্ষী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অনেক পুরাতন এবং শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উচ্চ শিক্ষার জন্য বিগত ২০০৬ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি মাধ্যমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে।বারহাট্টা উপজেলার সবচেয়ে পুরাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বারহাট্টা সি.কে.পি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯১৪ খ্রীঃ প্রতিষ্ঠিত হয়। অপরদিকে বারহাট্টা উপজেলার বুকে দ্বিতীয় পুরাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি’ বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নে ১৯৩৯ খ্রীঃ প্রতিষ্ঠিত হয়।বারহাট্টা উপজেলার দ্বিতীয় পুরাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি’ অনেক পুরাতন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ‘বাউসী অর্ধচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়’ নামে– ‘স্বর্গীয় রাম সুন্দর সাহা’ ১৯৩৯ খ্রীঃ প্রতিষ্ঠা করেন, প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে বিদ্যালয়টি শুধুমাত্র স্কুল শাখা পর্যন্ত ছিল।পরবর্তীতে উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৭ খ্রীঃ সাবেক সচিব মোঃ এম. এ খালেক নিজ প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টিকে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করেন এবং প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করেন ‘বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়’।এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ে অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং দেশ-বিদেশের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি পড়াশোনা করেছেন।স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে শ্রীযুক্ত বাবু ইশ্বর চন্দ্র সাহা (১৯৩৯ খ্রীঃ), প্রথম প্রধান শিক্ষক বাবু, রমেশ চন্দ্র রায় (১৯৩৯ খ্রীঃ) নিযুক্ত ছিলেন ।১৯৯৭ খ্রীঃ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, নন-এমপিও প্রভাষকগণ সরকারী বেতন-ভাতাদি না পাওয়ায়, তারা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন বাবদ প্রাপ্ত সামান্য টাকা দিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করতেন। অবশেষ ২০০৪ খ্রীঃ কলেজ পর্যায়ের শিক্ষকরা এমপিওভূক্ত হওয়ার পর শিক্ষকদের কষ্ট লাঘব হয়।কলেজের প্রতিষ্ঠাতার পর প্রথম সভাপতি হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেন সাবেক সচিব মোঃ এম. এ খালেক এবং অধ্যক্ষেদ্বায়িত্ব পালন করেন, মোঃ আঃ করিম।বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি কোন সংষ্কার না হওয়ায় স্কুল, কলেজের ছাত্র–ছাত্রীদের ক্লাসরুম, বিজ্ঞানাগার, এমনকি শিক্ষকদের মিলনায়তনটিও বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েগেছে। এমতাবস্থায় ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকগণ ঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছেন।বর্তমান অধ্যক্ষ তাহেরুল ইসলাম অনেক চেষ্টা তদবির করেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির জন্য কোন সাহায্য সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে পারেননি। তিনি অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলেন, প্রায় ৮৪ বছর চলে গেলেও প্রতিষ্ঠানটির তেমন কোন উন্নয়ন হয় নাই। আমার প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় এক হাজার দুইশত ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ অপর্যাপ্ত থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান ব্যহত হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, আমার স্বপ্ন অবসরে যাওয়ার আগে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে এহেন জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে মুক্ত করে, একটি আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসারে গড়ে তোলা। তাই তিনি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।