. “কেন আমি দোষী”
-:লাবনী রায়:-
(লেখার ছবি অংকনেঃচিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস)
একজন পুরুষ চরিত্রহীন না হওয়া পর্যন্ত একজন নারী ‘চরিত্রহীন’ হতে পারে না। অবসর গ্রহণের পর গৌতম বুদ্ধ বহু এলাকায় ভ্রমণ করেন। একবার তিনি গ্রামে গেলেন। সেখানে এক মহিলা তাঁর কাছে এসে বললেন, তুমি দেখতে রাজপুত্রের মতো। আমি কি জানতে পারি এই অল্প বয়সে জাফরান কাপড় পরার কারণ কি?
বুদ্ধ বিনীতভাবে উত্তর দিয়েছিলেন যে তিনি তিনটি প্রশ্নের সমাধান খুঁজতে অবসর নিয়েছিলেন। বুদ্ধ বললেন- আমাদের এই যৌবন এবং আকর্ষণীয় দেহ শীঘ্রই বৃদ্ধ হবে, তারপর অসুস্থ এবং অবশেষে মৃত্যুর মুখে পড়বে। বার্ধক্য, অসুস্থতা ও মৃত্যুর কারণ জানতে চাই।
বুদ্ধের চিন্তায় মুগ্ধ হয়ে মহিলাটি তাঁকে খাবারের আমন্ত্রণ জানালেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিষয়টি পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসীরা বুদ্ধের কাছে এসে তাকে এই মহিলার বাড়িতে খাবারের জন্য না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল কারণ সে চরিত্রহীন। বুদ্ধ গ্রামের প্রধানকে জিজ্ঞাসা করলেন- আপনিও কি বিশ্বাস করেন যে নারী চরিত্রহীন?
প্রধান বললেন, আমি শপথ করে বলছি সে একজন খারাপ চরিত্রের মহিলা, তুমি তার বাড়িতে যাবে না। বুদ্ধ প্রধানের ডান হাত ধরে তালি দিতে বললেন। প্রধান বললেন- আমি এক হাতে তালি বাজাতে পারি না কারণ আমার অন্য হাতটা আপনি ধরে রেখেছেন।
বুদ্ধ একইভাবে বলেছিলেন যে এই গ্রামের পুরুষরা চরিত্রহীন না হলে তিনি নিজে চরিত্রহীন হবেন কীভাবে। গ্রামের সব পুরুষ ভালো থাকলে এই নারী এমন হতো না, তাই তার চরিত্রের জন্য দায়ী এখানকার পুরুষরা।কথাটা শুনে সবাই লজ্জা পেত, কিন্তু আজকাল আমাদের সমাজের পুরুষরা লজ্জাবোধ করে না, বরং গর্ববোধ করে কারণ এটাই আমাদের ‘পুরুষশাসিত’ সমাজের রীতি ও নীতি।