শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৩ পূর্বাহ্ন

শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় এমপিসহ ২০ জনকে আসামী করার আবেদন

Sanu Ahmed
  • Update Time : বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩
  • ৭৮ Time View

 

আশিকুর রহমান, স্টাফ রিপোর্টার :

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশীদ খানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনের সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহনসহ ২০ জনের নামে নতুন করে অন্তর্ভূক্তির আবেদন করেছেন নিহতের পরিবার। এর আগে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছিলেন নিহতের ছেলে মামলার বাদী আমিনুর রশীদ খান তাপস।মঙ্গলবার (৪ জুলাই) নিহত হারুনুর রশীদ খানের ছেলে ও মামলার বাদী আমিনুর রশিদ খান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার, গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি, পিবিআইসহ বিভিন্ন দপ্তরে এই আবেদন করেন।
আবেদনে সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূইয়া মোহনসহ তার অনুসারী আসাদুজ্জামান, এমপির ভাই জুনায়েদুল হক ভূইয়া (ঝুনু), সাবেক চেয়ারম্যান ফরহাদ আলম ভূইয়া, দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, সৈয়দ মাসুদ পারভেজ, ফারুক খান, সিরাজ মিয়া, বাদল মিয়া, আশরাফুল ইসলাম রিপন, সুমন, আমান উল্লাহ ভূইয়া, রাকিবুল ইসলাম ইরফান, কাউছার মিয়া, শাহাদত হোসেন, সেলিম, সজিব মোল্লা, আরমান পাশা, শাওন খান ও বাবুল মিয়াকে এই হত্যা মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার অনুরোধ করা হয়েছে।কেন এমপিকে আসামি করার আবেদন করা হয়েছে জানতে চাইলে মামলার বাদী আমিনুর রশীদ খান তাপস বলেন, আমার বাবা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর এমপি মোহন সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি না করে বরং খুনিদের শেল্টার দিয়ে আসছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর এমপির ভাই জায়েদুল হক ভূঁইয়া (ঝুনু) খুনি আসাদের বাড়িতে গরুর মাংস দিয়ে খিচুরি খেয়ে খুনীদের নিয়ে আমোদ ফূর্তী করেছে। এতে প্রমানিত হয় এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য ছিল এমপি মোহনসহ তার অনুসারীরা। তাই তাদের বিচার দাবিতে আমরা এই মামলায় তাদেরকে আসামী হিসেবে দেখতে চাই। মামলা করার সময় তাদের কেন আসামি করা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আসামি করতে চেয়েছিলাম, পুলিশের জন্য পরিনি।
এ বিষয়ে নরসিংদী-৩ ( শিবপুর) আসনের সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহনের কাছে জানতে চাইলে তিনি তাপসের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, মরহুম উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন রশীদ খান ছিলেন আমার পিতৃতুল্য অভিভাবক। তার মৃত্যতে আমিও আমার অভিভাবক হারিয়ে ব্যথিত। সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করে তিনি আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ডটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য একটি চিহ্নিত মহল ষড়যন্ত্র করছে।
উল্লেখ, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে শিবপুর থানার কাছে নিজের বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হন উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশিদ খান। প্রথমে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর গত ১৭ এপ্রিল তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভারত থেকে ফিরে আবারও অবস্থার অবনতি হলে গত ৭ মে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ারে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতা।হামলার ঘটনায় দুই দিন পর উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে মোঃ আমিনুর রশীদ খান বাদী হয়ে পুটিয়া এলাকার আরিফ সরকারকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে শিবপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন, পুটিয়া ইউনিয়নের কামারগাঁও এলাকার আরিফ সরকার, পূর্ব সৈয়দনগর এলাকার মো. মহসীন মিয়া, কামারগাঁও এলাকার ইরান মোল্লা, মুনসেফেরচর এলাকার শাকিল, কামারগাঁও এলাকার হুমায়ুন ও নরসিংদী শহরের ভেলানগর এলাকার গাড়ি চালক নূর মোহাম্মদ।
পরে পুলিশ হত্যাচেষ্টায় ব্যবহ্নত অস্ত্রসহ ফরহাদ হোসেন ও আরিফুল ইসলাম আরিফকে রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ অস্ত্র সরবরাহ করেছে বলে স্বীকার করেন হামলাকারীরা। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পৃথক মামলা দায়ের করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102