মহ: মহসিন হাবিব
নাইতে গেলাম ইছামতীর ঘাটে
তীরে একখান তরী আছে বটে।
সেথায় বস্তি রমণীরা করছে স্নান
ঘাটের এক কোণে নিলাম স্থান।
কচি কাঁচা দিচ্ছে উল্টো ডুব
ইছামতি ওদের আদর করে খুব।
সোহাগ মাখা পানি ছেটায় সখীরা
ওদের দেখে মোর হৃদ পাগলপারা।
টিপে টিপে নামলাম আবক্ষ জলে
রবির কিরণ যাচ্ছে নদীর তলে।
সারা অঙ্গে মাখলাম মতির ফোঁটা
একটু আধটু লাগলো পানার কাঁটা।
কেনো এলাম নাইতে মতীর তীরে
ভাবলাম যাই বাটির কোণে ফিরে।
পারলাম না কুটির পানে ফিরতে
অগত্যা মতীর টানে হোলো নাইতে।
মতী আমার হৃদ গগনের স্মৃতি
ওর লাগি আছে মোর সুপ্রীতি।
নাইতে নাইতে সময় যায় চলে
কখন দেখি রবি মামা গেছে ঢলে।
সখীরা সব ফিরে গেছে আপন কুলে
আমি ও কুটিরে যেতে গেছি ভুলে।
মতীর সাথে একাকী কই দুটি কথা
আমায় পেয়ে শুনালো পুরান ব্যথা।
নীলকররা চাবুক করতো শক্ত
তাই দিয়ে নিতো চাষীর তাজা রক্ত।
লাশ গুলো ফেলতো আমার বক্ষে
শহীদের হাড়গুলো করি আজও রক্ষে।
কেও রাখেনি তাদের খবর
আমার তলে রেখেছি সযত্নে কবর।
তোদের ওই বিভূতি বাবুর লেখায়
রেখেছে তাদের সোনার থালায়।
একাত্তরের যুদ্ধে কত লাশ
বয়ে বেড়াতাম বারো মাস।
ছিঁড়ে খেতো কত কাক পক্ষী
ওই ইতির ও আমি জলন্ত সাক্ষী।
আমার বুকের দুধারে তাদের বংশধর
শিয়াল ডাকা ভোরে শুনি সেই আর্তস্বর।
কইতে পারিনা কাওকে আমার কষ্ট
তুই নতুন করে লিখতে হবি সচেষ্ট।
নাইতে গিয়ে পেলাম কত কাহিনী
ইছামতী আমার কাছে মন মোহিনী।