একরামুল হক দীপু
আমাদের এই ছায়াপথের দুটি উজ্জ্বল গ্রহের একটির নাম – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্যটি কাজী নজরুল ইসলাম। একদল নজরুলকে ছোট করতে তাঁর জন্মদিনে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে রবীন্দ্র – নজরুল উৎসব করে
অন্যদিকে আর একদল পারতপক্ষে রবি ঠাকুরের নাম মুখে নিতে চায় না।
হতভাগা নজরুল আজন্মের ষড়যন্ত্রের শিকার তার জীবদ্দশায় একদল তাকে কাফের ভাবত আর হিন্দু সম্প্রদায় ভাবত নজরুল তাদের জাত মেরে দিয়েছে। আগাগোড়া অসাম্প্রদায়িক নজরুল এসব গায়ে মাখতেন না। যতই হামদ নাত আর শ্যামা সঙ্গীত লিখেন না কেন কবিকে তারা কখনোই আপন ভাবতে পারেন নি সেই মোল্লা পুরোহিতের দল আজো নজরুল এর বিরোধিতায় সক্রিয়।
সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম নেয়া রবীন্দ্রনাথকে অবশ্য এইসব দুঃখ কষ্ট পেতে হয়নি। তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে তিনি দেবতুল্য। হয়ত সেই কারনেই পাকিস্তান আমলে রবীন্দ্র চর্চা প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। সেই পাকিস্তানী প্রেতাত্মা আজো সুযোগ পেলে রবি ঠাকুরের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করে। এদের কাছে রবীন্দ্র চর্চা মানে হিন্দুয়ানী চর্চা করা।মূলতঃ এরা সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। এরা বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষী।
বাংলা, বাঙালি ও বাংলা ভাষার জন্য রবীন্দ্র নজরুল কতটা অপরিহার্য তার জন্য আজ আর গবেষণার প্রয়োজন নেই। ভাত ছাড়া হয়ত বাঙালির চলবে, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ নজরুল ছাড়া একদিন ও চলবে না। একজন রবীন্দ্রনাথ একজন নজরুল আদৌও কি বিশ্ব সাহিত্যে আর একবার আসবে ? এটি অসম্ভব প্রায় । এই দুই মহান কবি একে অপরের সাথে আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। একজন আর একজনকে বই উৎসর্গ করেছেন। নজরুল জেলে অনশন করলে রবি ঠাকুর টেলিগ্রাম করে তাঁর অনশন ভাঙিয়ে ছিলেন।
ইতিহাস দুজনকে সাহিত্যে তাদের স্থান নির্ধারণ করে দিবে। আমরা অতি উৎসাহী হয়ে তাদের যেন পাল্লায় না তুলি।
একরামুল হক দীপু
কবি ও সংগঠক।